নির্বাচনে জয়ী হতে আ.লীগই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে : মির্জা ফখরুল
আগামী জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, অনেকে সাম্প্রদায়িক হামলার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আমি মনে করি, এখানে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, সেটির একটিই উদ্দেশ্য। তা হলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হলো, বর্তমানে বেআইনিভাবে যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে আছে, তাদের ক্ষমতাকে আরও দীর্ঘায়িত করা, সামনে যে নির্বাচন-নির্বাচন খেলা আসছে, সেই খেলায় আবার জয় লাভ করা। এটিই হচ্ছে মূল লক্ষ্য।
রোববার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক গোল টেবিল বৈঠকে বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আজকের প্রেক্ষাপট, আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, এসব ঘটনার জন্য সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়ী। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এসব ঘটনা ঘটিয়েছে সরকার, আর উদ্দেশ্য হচ্ছে এখানে বিএনপিকে জড়িয়ে জনগণের আন্দোলন থেকে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরিয়ে নেওয়া।
রংপুরের পীরগঞ্জের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ছাত্রলীগের এক নেতা ঘটিয়েছে- এমন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে আরেকজন আছে, সৈকত মণ্ডল ও রেজাউল। তারা পুলিশের উপস্থিতিতে মাঝিপাড়ায় আগুন জ্বালিয়েছে। শুধু এটি নয়, প্রতিটি হামলা সরকার করেছে, সরকারের এজেন্টরা করেছে এবং তাদের মদদেই হয়েছে। এসব হামলা করে তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাছিল করতে চেয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটি কাকতালীয় ব্যাপার আছে। নাকি এর মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে, আমি বিষয়টি জানি না। কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন অবমানটার ঘটনা যখন ঘটছে, তখন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ত্রিপুরায় একটি নির্বাচন হচ্ছে। সেখানেও কিন্তু সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে। সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাছিল করার ঘটনা নতুন কিছু নয়।
বিএনপির মহাসচিবের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সবাই বলেছে, আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাই। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হলে এ মুহূর্তে সবার আগে তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে, তারা অত্যন্ত সুচতুরভাবে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একটি দলকে স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় রাখার জন্য কাজ করছে। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে যাতে সব দলের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হতে পারেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হতে পারে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক সেলিমা রহমান। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
এএইচআর/আরএইচ