যুবলীগ চেয়ারম্যান পরশের নামে ফোন করছে কে?
‘আমি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ফজলে শামস পরশ বলছি।’ দেশের বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের ফোন করে বলা হচ্ছে এ কথা।
কাউকে ‘ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে’ বলে ভয় দেখানো হচ্ছে। কারো কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ এই ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান ভেবেই করছেন নানা তদবির। যুবলীগ চেয়ারম্যান পরিচয়ে তদবির করার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই প্রতারক।
সম্প্রতি বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগ নেতাদের ফোন পেয়ে বিষয়টি আমলে নেন যুবলীগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশ। তিনি বুঝতে পারেন তার নম্বরটি ক্লোন করে অর্থ আত্মসাৎ করছে একটি চক্র।
রাজধানীর বনানী থানায় ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে পরশের পক্ষে মামলা করেছেন ব্যারিস্টার রানা তাজউদ্দিন খান। মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪ ও ২৬ ধারায় করা হয়েছে। এতে ‘মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোনিং করে টাকা দাবির’ অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পরশের নাম করে তার ব্যবহৃত রবি নম্বরটি ক্লোন করে গত ৯ অক্টোবর প্রথম ফোন করা হয় গাইবান্ধা যুবলীগের সভাপতি সরদার মো. শাহীন হাসান লোটনের গ্রামীণ ফোনের নম্বরে। সংগঠনের জন্য চাঁদা হিসেবে তাকে একটি রকেট নম্বরে টাকা পাঠাতে বলা হয়। একই দিন নেত্রকোনা যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ও সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের চপলকে ফোন করে বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলা হয়।
১০ অক্টোবর মুশফিকুল ইউনুস জায়গীরদার নামে এক ব্যক্তি এবং পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সনি বিশ্বাসকে ফোন করে বিকাশে টাকা চাওয়া হয়। এছাড়াও গত কয়েকদিনে একই পরিচয়ে দেশের কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ফোন করে টাকা দাবি করে প্রতারক চক্রটি।
সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিজের মোবাইল ফোনটি বন্ধ রেখেছেন পরশ। তবে শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে বিষয়টি খোলাসা করেন তিনি। শেখ পরশ বলেন, ‘সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি। যুবলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সকলকে এই মর্মে সতর্ক করা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সম্মানিত চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ফোন করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টাসহ নানা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে একটি প্রতারক চক্র। অনুগ্রহপূর্বক কেউ প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিবেন না।’
বর্তমানে মামলাটির ছায়া তদন্ত করছে পুলিশে কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগ।
ইউনিটের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরা মামলাটির ছায়া তদন্ত করছি। আসামিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’
এআর/এইচকে