জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকীতে বিএনপির কর্মসূচি
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী ১৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার)। দলের প্রতিষ্ঠাতার জন্মবার্ষিকীতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অধিষ্ঠিত হন। তিনি ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত দল তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়।
বিএনপির দপ্তর থেকে জানানো হয়, জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী ১৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ভোরে দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে বিএনপির। এরপর বেলা ১১টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা শেরেবাংলা নগরস্থ জিয়ার মাজারে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পার্ঘ অর্পণ করবেন।
দুপুর ১২টায় দলের বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গসংগঠন মাজারে শ্রদ্ধা জানাবেন। দুপুর ৩টায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় যুক্ত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও শীর্ষ নেতারা।
এইদিন সকাল ১০টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জিয়াউর রহমানের আলোকচিত্র প্রদর্শনী করবে অঙ্গসংগঠনগুলো। পাশাপাশি ড্যাবের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। একইভাবে বুধবার (২০ জানুয়ারি) আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও ফ্রি মেডিকেল চলবে বলেও বিএনপির দপ্তর থেকে জানানো হয়।
জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে বলেন, জাতির এক ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমান এক ঐতিহাসিক যুগান্তকারী দায়িত্ব পালন করেন। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য নেতৃত্বহীন জাতির দিশারী হয়ে শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় ও তিনি যুদ্ধে অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ে পরিণত হন।
মির্জা ফখরুলের দাবি, জাতির এক চরম দুঃসময়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে শহীদ জিয়া ক্ষমতার হাল ধরেন। তিনি ক্ষমতায় এসেই বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি আরও বলেন, শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথেই আমরা আধিপত্যবাদের থাবা থেকে মুক্ত হব ও গণতন্ত্র ফিরে পাব। এ জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ‘গণতন্ত্রের মা’ গৃহবন্দী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগমারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫৩ সালে জিয়াউর রহমান কাকুল পাকিস্তানি মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৫৭ সালে তাকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি করা হয়। এরপর তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭০ সালে একজন মেজর হিসেবে তিনি দেশে ফিরে আসেন ও চট্টগ্রামে নবগঠিত অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পদের দায়িত্ব পান।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ১ নম্বর সেক্টর ও জেড-ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বের জন্য তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে কিছু বিপদগামী সেনার গুলিতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে নিহত হন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।
এএইচআর/ওএফ