‘হাজার হাজার মানুষ জানাজা পড়া আর কফিনে লাশ না থাকা এক না’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি এখন নতুন বিতর্ক শুরু করেছে। তারা বলছেন হাজার হাজার লোক জিয়ার জানাজা পড়েছেন। হাজার হাজার লোক জানাজা পড়া আর কফিনে জিয়াউর রহমানের লাশ থাকা না থাকা এটা কি এক কথা! মানুষ তো নিহত প্রেসিডেন্টের জন্য জানাজা পড়তে এসেছে, সে কফিনে যে প্রেসিডেন্টের লাশ নেই এটা তো আর মানুষ জানে না।
শনিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক একটি সেমিনার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সেমিনারটির আয়োজন করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, লাশ নিয়ে বিতর্ক করতে চাই না। কিন্তু এটাই সত্য। পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর ইসলামাবাদে জানাজায় এর চেয়ে বেশি লোক হয়েছিল, যত লোক জিয়ার জানাজায় হয়েছে। কিন্তু ওই কফিনেও জিয়াউল হক নেই, এই কফিনেও জিয়াউর রহমান নেই। এটাই হলো সত্য।
তিনি বলেন, সত্য লুকোতে চাইছেন, কিন্তু সত্য থেকে পালিয়ে যেতে পারবেন না। সত্য বেরিয়ে আসবে। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে বিদেশি ষড়যন্ত্রও ছিল। হত্যার কুশীলবদের সঙ্গে দুই-একটা বিদেশি দূতাবাসের যোগাযোগ ছিল।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল উল্লেখ করে কাদের বলেন, এই হত্যাকাণ্ডকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কে আশ্রয়? কে প্রশ্রয়? কে নিরাপদে বিদেশে পালিয়ে কে পুনর্বাসনে? কে? কে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছে? কে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছে? সাতই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করল কে? মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ নিষিদ্ধ, সংবিধানকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করলো কে? এইসব অপকর্মের মূল হোতা কে? ইতিহাসের এই সত্যকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারেন, কিন্তু ইতিহাস কাউকে ছাড়বে না। হত্যা হত্যাকেই ডেকে আনে।
পলাশীতে নবাবকে যারা হত্যা করেছে, তাদের একজনেরও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে যে বুলেটে হত্যা করা হয়েছে, সে বুলেটে জেনারেল জিয়াউর রহমানকেও চলে যেতে হয়েছে।- যোগ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ. কে. এম. আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী এবং মহাসচিব জনাব রঞ্জন কর্মকার।
এইচআর/এমএইচএস