এবারও ১৫ আগস্ট পালন হচ্ছে না খালেদা জিয়ার জন্মদিন
১৫ আগস্ট (রোববার) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৭৭ বছরে পা দিচ্ছেন। যদিও এ জন্মতারিখ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা বিতর্ক রয়েছে। এজন্য বিতর্ক এড়াতে গত কয়েক বছরের জন্মদিনের মতো এবারের ৭৬তম জন্মদিনে কোনো কর্মসূচি নেই বিএনপির।
মূলত ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের দিনে জন্মদিন পালনের বির্তক থেকে বেরিয়ে আসতে চায় বিএনপি। এজন্য দলটি চেয়ারপারসনের জন্মদিনের কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে ১৬ আগস্ট পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
শনিবার (১৪ আগস্ট) বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খালেদা জিয়ার আরোগ্য, মুক্তি কামনা এবং করোনাসহ অন্যান্য রোগে মৃত্যুবরণকারী মানুষজনের আত্মার মাগফেরাত ও অসুস্থদের আশু সুস্থতা চেয়ে ১৬ আগস্ট (সোমবার) দেশব্যাপী দোয়া-মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে জন্মদিনের বিষয়টি উল্লেখ ছিল না।
বিএনপির নেতারা বলছেন, সর্বশেষ খালেদা জিয়ার ৭০তম জন্মদিনে সিদ্ধান্ত হয় ১৫ আগস্ট আর কেক কাটা হবে না। কেক কাটার পরিবর্তে মিলাদ মাহফিল ও জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করা হবে। সেই অনুযায়ী ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট ৭১তম জন্মদিনে কেক না কেটে সকালে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিল করা হয়। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সেই ধারা অব্যাহত ছিল। এরপর গত ২০১৯ সালের ৭৫তম জন্মদিনে ১৫ আগস্টের পরিবর্তে ১৬ আগস্ট জন্মদিন উপলক্ষে জিয়ার কবর জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এবারও সেটা অব্যাহত রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ম্যাডামের ৭০তম জন্মদিন থেকে সিদ্ধান্ত হয় পরবর্তী সময়ে তার জন্মদিনে কোনো কেক কাটা হবে না। এরপর থেকে জন্মদিনে কেক কাটা হয়নি। কেক কাটার পরিবর্তে ১৫ আগস্ট সকালে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিল মাহফিলের আয়োজন করা হতো। গত ২ বছর ধরে সেটাও একদিন পিছিয়ে ১৬ আগস্ট করা হয়েছিল। এই বছর সেই অনুযায়ী করা হচ্ছে। আর ১৫ আগস্ট তো শোক দিবস।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার জন্মদিন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। খালেদা জিয়ার বাবা এস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনী হলেও তিনি দিনাজপুরে বসবাস করতেন। খালেদা জিয়ার জন্মও সেখানে। তার মায়ের নাম তৈয়বা মজুমদার। ১৯৬০ সালের আগস্ট মাসে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বাংলা পিডিয়াসহ খালেদা জিয়ার জীবনীর ওপর রচিত কয়েকটি বইয়েও তার জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৫ অগাস্ট ৫০ পাউন্ডের কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন খালেদা জিয়া। ২০১৫ সালের ১৫ অগাস্ট প্রথম প্রহরে তিনি কেক না কাটলেও সন্ধ্যার পরে কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন। আর ২০১৬ সালে বন্যা, গুম-খুনকে কারণে দেখিয়ে কেক কাটার কর্মসূচি বাতিল করা হয়। ২০১৭ সালে জন্মদিনে লন্ডনে ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দুর্নীতির মামলা সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ৭৪তম জন্মদিনে দিনে তিনি ছিলেন নাজিম উদ্দিন রোড়ের কেন্দ্রীয় কারাগারে। ৭৫তম জন্মদিনের কারাবন্দি অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। আর গত বছরের ২৫ মার্চ দুই শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় আছেন খালেদা জিয়া। সেখানে গত বছর ৭৫তম জন্মদিন পালন করেন। এবারও জন্মদিনে ফিরোজায় থাকবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এএচইআর/এসএম