ছকে বাঁধা পড়েছে খালেদা জিয়ার জীবন
করোনা থেকে সেরে উঠলেও চিকিৎসকদের পরামর্শে এখনও নির্দিষ্ট ছকে জীবন কাটাতে হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। করোনা মহামারি, স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কার্যত ছকবন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
খালেদা জিয়ার পরিবার ও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইবাদত, ঘুম, খাওয়া-দাওয়া, পত্রিকা পড়া, টেলিভশন দেখা এবং ভিডিও কলে লন্ডনে অবস্থানরত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেই এখন সময় কাটছে খালেদা জিয়ার। তার দিনের শুরুটা হয় ফজরের নামাজ পড়ে। এরপর আবার ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। এরপর ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা পড়ার পাশাপাশি সকালের নাস্তা সারেন। তারপর গৃহকর্মী ফাতেমার সহযোগিতায় চিকিৎসকদের দেওয়া ওষুধ সেবন করেন। এ সময় টেলিভিশনও দেখেন। এরপর গোসল, নামাজ, খাওয়া শেষে বিশ্রামে যান আসরের নামাজ পর্যন্ত। আসরের নামাজ পড়ে নাস্তা খেতে খেতেই দেশে অবস্থানরত স্বজনদের সঙ্গে কিছু সময় টেলিফোনে কথা বলেন। মাগরিবের নামাজের পর প্রায় নিয়মিত চিকিৎসকরা তাকে দেখতে যান। চিকিৎসকরা চলে যাওয়ার পর নামাজ আদায় ও রাতের খাবার সারেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ও লন্ডনের সময় মিলিয়ে লন্ডনে বসবাসরত ছেলে, ছেলের স্ত্রী ও নাতনিদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন। তারপর ঘুমাতে যান। এইভাবে রুটিন জীবন-যাপন করছেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শে আমরা এখন আর তার বাসায় যাই না। মাঝে-মাঝে টেলিফোনে কথা হয়। আগের মতো এখন বেশি কথা বলা হয় না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগের রোগগুলো ছাড়া বর্তমানে খালেদা জিয়া সুস্থই আছেন। চিকিৎসকরাও নিয়মিত বিকেলে বা সন্ধ্যার পরে তাকে দেখতে যান। আগামী ১৯ আগস্ট তার করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা রয়েছে।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আল মামুন বলেন, কিছু বলার দরকার হলে মহাসচিব বলবেন আপনাদের। আমরা এমনিতে যখন দরকার হয় দেখতে যাই।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ও ভালো আছে। তার আগের রোগগুলো ছাড়া নতুন করে কোনো সমস্যা নেই এখন।’
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে দলীয় উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বিষয়ে এখন আমরা আর মুভ করছি না আপাতত।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। দীর্ঘ ২৫ মাস কারাভোগের ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে তার ছয় মাসের দণ্ড স্থগিত করা হয়। এরপর দুই দফা তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়। চলতি বছরের ১১ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। তখন ৫৪ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এএইচআর/এনএফ