করোনা মোকাবিলায় লকডাউন-কারফিউ সমাধান নয়
করোনা মোকাবিলায় গণটিকা কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, আমাদের দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ও কারফিউ কোনো সমাধান নয়।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।
গণটিকা কর্মসূচি জোরদার করে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে হবে উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, পাশাপাশি সংক্রমণ প্রবণ এলাকায় করোনা চিকিৎসায় ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে।
দেশের বাস্তবতায় লকডাউন সফল হবে না বলে দাবি করে জিএম কাদের বলেন, লকডাউন চলছে কিন্তু মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার জরিপ বলছে, করোনায় ১ বছরে দেশের প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবনমান নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। আর আগে থেকে দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছিলেন সাড়ে ৩ কোটি মানুষ। গরিব মানুষের ঘরে খাবার নেই, ওষুধ ও শিশুখাদ্য কেনার পয়সা নেই। এ ধরনের মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
সরকারের তরফ থেকে যে সাহায্য দেওয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত অপ্রতুল বলে উল্লেখ করে সাবকে এই মন্ত্রী বলেন, সাহায্যের একটি বড় অংশ প্রকৃত দরিদ্রদের হাতে পৌঁছচ্ছে না। তাই আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ও কারফিউ কোনো সমাধান দিতে সক্ষম হচ্ছে না। লকডাউন চলছে কিন্তু প্রতিদিন সরকারি হিসেবেই প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন এখন ২০০-র বেশি। সাধারণ মানুষের ধারণা, এই সংখ্যা হয়ত আরও বেশি। আক্রান্ত ও মৃত্যুহার ঊর্ধ্বগামী এবং কমার কোনো লক্ষ্মণ বা কারণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে বাস্তবে লকডাউনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।
লকডাউনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও খেটে খাওয়া মানুষের দুঃখ-দুর্দশা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, প্রতিদিন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে তাদের আহাজারি। সে কারণেই গণটিকা জোরদার করে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই জনগণের জীবনে স্বস্তি আসবে এবং জীবন রক্ষা পাবে।
এএইচআর/এইচকে