করোনায় দুই মাসে বিএনপির ২৮৩ নেতাকর্মীর মৃত্যু
করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবশেষ ২মাসে বিএনপির ২৮৩ জন নেতাকর্মী মারা গেছেন। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দলটির মোট ৭০৯ জন নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, দলের করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা গত ১৫ জুলাই সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, সারাদেশে দলের ৭০৯ জন নেতাকর্মী করোনায় মারা গেছেন। তবে গত কয়েকদিনে দলের আরও ৪-৫ জন নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর এসেছে। সেই হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৮ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত মাত্র এক সপ্তাহে সারাদেশে বিএনপির ৬৫২ জন নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর চলিত বছরের ১৪ মে থেকে ১৫ জুলাই- এই দুই মাসে করোনায় মারা গেছে ২৮৩ জন নেতাকর্মী। সবমিলিয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপির ৭০৯ জন নেতাকর্মী মারা গেছেন। এরমধ্যে ১৯ জন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাসহ কয়েকজন জাতীয় নেতা রয়েছেন।
বিএনপির করোনায় মারা যাওয়া নেতাদের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দলটির সবচেয়ে বেশি নেতাকর্মী মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। আর সবচেয়ে কম নেতাকর্মী মারা গেছেন ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগে (সাংগঠনিক বিভাগ)।
তালিকা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিভাগে ২০১ জন, ঢাকা বিভাগে ১৮৬, খুলনা বিভাগে ১৫৪, রংপুর বিভাগে ২৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৪, ময়মনসিংহ বিভাগে ১১, ফরিদপুর বিভাগে ১১, বরিশাল বিভাগে ১৯, কুমিল্লা বিভাগে ৩৫ এবং সিলেট বিভাগে ১৫ জন মারা গেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতাদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন- ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, এম এ হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, সহ-গ্রামসরকার বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য শফিউল বারী বাবু, খুররম খান চৌধুরী, আহসান উল্লাহ হাসান, বিএনপির পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আহাদ আহমেদ, সাবেক মন্ত্রী টি এম গিয়াস উদ্দিন, এ টি এম আলমগীর, সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা, আমেরিকার বোস্টন বিএনপির ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক মিতোষ বড়ুয়া, জাতীয় ট্যাক্স-বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গফুর মজুমদার, ওলামা দলের প্রচার সম্পাদক দ্বীন মোহাম্মদ কাশেমী, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমান মিন্টু, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক।
বিএনপির নেতারা বলছেন, করোনায় মারা যাওয়া দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল তাদের পরিবারকে দলীয় তহবিল থেকে সাহায্য-সহযোগিতা করা হচ্ছে। আর দুই ঈদে তাদের পরিবারকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে মারা যাওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের কেউ আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করলে তাদেরও যথাসাধ্য সাহায্য করা হচ্ছে।
বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনাভাইরাসে দলের যেসব নেতাকর্মী মারা যাচ্ছেন তাদের পরিবারকে দলীয় তহবিল থেকে যতটুকু সম্ভব আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ ৫৪ দিন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত ১৯ জুলাই তিনি করোনা টিকার ১ম ডোজ নেন। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও করোনার টিকা নিয়েছেন।
এএইচআর/এসএম/জেএস