মানুষ জেগে উঠলে আ.লীগ পালানোর পথ পাবে না: মির্জা ফখরুল
সাধারণ মানুষ জেগে উঠলে ক্ষমতাসীন দল আওয়মী লীগ পালানোর পথও খুঁজে পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (২৭ জুন) দুপুরে গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (২৬ জুন) অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো জানাতে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
‘বিএনপির ভবিষ্যৎ অন্ধকার’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা এতো উদ্বিগ্ন কেন। এই কারণে যে তারা মনে করে, বিএনপি একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা জনগণের ইচ্ছা-আকাঙ্খা প্রতিপ্রলিত করে। এ কারণে যে বিএনপি একমাত্র দল যারা এই ভয়াবহ দানব সরকারকে পরাজিত করে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ ঘোরতর অমানিশার অন্ধকারে নিমজ্জিত। আওয়ামী লীগ যে কাজগুলো করছে তা গোটা জাতিকে অন্ধকারে দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জাতির যা কিছু ভালো, সুন্দর ছিল তা ধ্বংস করে দিয়েছে।
কবি নির্মেলেন্দ্র গুণের একটি কবিতার কয়েকটি পঙক্তি উক্তি করে মির্জা ফখরুল বলেন, সময়ের অপেক্ষা। মানুষ যেই দিন জেগে উঠবে। সেইদিন আওয়ামী লীগ পালাবার পথ খুঁজে পাবে না।
তিনি আরও বলেন, করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য প্রমাণ করেছে যে সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। এ সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যথায় বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
জনগণ সহযোগিতা করলে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে- স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ তো সহযোগিতা করতে চায়। আপনারা তো জনগণকে সহযোগিতা করার কোনো সুযোগ দিচ্ছেন না। আপনাদের যে চরম দুর্নীতি-অদক্ষতা, সে কারণে করোনা পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চেলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতে করোনা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল, কিন্তু তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে তা এখন ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রত্যেক দেশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে করোনা সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছে। আর আমাদের সরকার কিভাবে দুই পয়সা ইনকাম হবে সেই চিন্তা গোটা জাতিকে আজ চরম বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তার (স্বাস্থ্যমন্ত্রীর) বক্তব্য একেবারে গ্রহণযোগ্য নয় বলে আমরা মনে করছি।
লকডাউন তামাশায় পরিণত হয়েছে
মির্জা ফখরুল বলেন, ইতোমধ্যে সরকার ৭ দিনের জন্য পুনরায় লকডাউন ঘোষণা করেছে। যা এখন তামাশায় পরিণত হয়েছে। সরকারের অযোগ্যতা এবং জবাবদিহিহীনতার কারণে লকডাউন সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। গরিব সাধারণ মানুষ, দিন আনে দিন খায় শ্রেণির মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা না করে, অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরের শ্রমিক ও কর্মরত ব্যক্তিদের নগদ টাকা ট্রান্সফারের ব্যবস্থা না করে লকডাউন কখনই কার্যকর হতে পারে না।
কেন আপনরা লকডাউন তামাশায় পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেন বলবো না? আপনারা (সরকারকে) এর আগে লকডাউন দিলেন। প্রথমে লকডাউন নয়, সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলো। তখন দেখা গেল, শ্রমিকরা একবার গেল আবার ফিরে এলো। আবার গতকালের সিনটা দেখেন, জেলার সঙ্গে তারা গাড়ির যোগাযোগটা বন্ধ করে দিলো, এখন লকডাউনের ৭ দিনের ছুটি মনে করে একদল লোক পায়ে হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছে, আরেক দল ঢাকা ফিরছে। এইগুলো তারা আগে চিন্তা করবে না, কি হতে পারে।
এএইচআর/এসএম