আপনি বিএনপির কে, জাফরুল্লাহকে ছাত্রদল নেতা
বক্তব্য দেওয়ার সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে থামিয়ে ছাত্রদলের এক নেতা প্রশ্ন করেছেন, ‘আপনি বিএনপির কে? বিএনপি নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলেন!’
শনিবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত এক আলোচনায় সভায় এ ঘটনা ঘটে। জাফরুল্লাহকে প্রশ্ন করা ওই নেতা হলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওছার।
আলোচনায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপির ক্ষমতায় আসারই ইচ্ছে নাই। ক্ষমতায় আসতে হলে ইচ্ছে, আগ্রহ থাকতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পরিকল্পনা করতে হবে, যে কোন কোন জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে। সেগুলো নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আজ বিএনপি পরিচালিত হচ্ছে আল্লাহর ওহী দিয়ে। ওহী লন্ডন থেকেই বেশী আসে। এ স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটাতে হলে, সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটাতে হবে বিএনপির নিজের ঘরে। সরকার যেভাবে খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, বিএনপি হয়তো উপলব্ধি করতে পারছে না।
তারেক রহমানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, আমি বারবার বলেছি, তারেক তুমি দুই বছর চুপচাপ বসে থাকো। পারলে বিলেতে লেখাপড়ায় যুক্ত হয়ে যাও, সেখানে বহুভাবে লেখাপড়া হয়।
এ কথা বলার পরই ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওছার সালাম জাফরুল্লাহকে থামিয়ে দেন এবং প্রশ্ন করেন, আপনি বিএনপির কে? আপনি বিএনপি নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলেন!
উত্তরে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, না কেউ না, এটা তো গণতন্ত্রে আমার বলার অধিকার আছে। তখন ছাত্রদলের ওই নেতা বলেন, না, আপনি অন্যদের নিয়ে বলুন। আমাদের নেতা সম্পর্কে বলছেন, আপনি তো বিএনপির কেউ না।
তারপর জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কেউ না তো বটেই। কথা শুনে তারপর বলেন। আপনাদের ভালোর জন্যই বলছি। আপনাদের ভালো আপনারাই বোঝেন না। তখন কাওছার বলেন, না না আমরা অবশ্যই বুঝি, আপনি আপনারটা বুঝেন, আমরা আমাদেরটা বুঝি। আপনি আমাদের নেতাদের নিয়ে কখনো কথা বলবেন না। কখনোই কথা বলবেন না। আর যদি কখনো কথা বলেন, কিছু হলে আমরা দায়ী থাকব না। আপনি জয়কে (সজিব ওয়াজেদ জয়) নিয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে (প্রধানমন্ত্রী) নিয়ে বলেন। এসব কথা বলার পর ছাত্রদলের নেতারা চলে যান।
তবে কথা চালিয়ে যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাইরে থেকে হুকুমনামা দিয়ে হবে না, আজ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া ক্ষমতার পরিবর্তন সম্ভব না।
ছাত্রদলের ওই নেতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওখানে (আওয়ামী লীগে) তারা করছে এক ব্যক্তির বন্দনা। এখানেও কিছুক্ষণ আগে যে ঘটনা ঘটল, সেটাতেও এক ব্যক্তির বন্দনা। এভাবে এক ব্যক্তির বন্দনা জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করা যায় না, বিশেষ করে আমার মত লোককে ভয় দেখিয়ে কণ্ঠ রোধ করা যায় না। আমি যেটা ভালো মনে করব, জাতির জাতির জন্য যা প্রয়োজন মনে করব, আমি বলেই যাব। সেটা কারো পছন্দ হোক বা নাই হোক।
এ সময় আরও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও ইআরআই এর চেয়ারম্যান ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ প্রমুখ।
এমএইচএন/আরএইচ