হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলায়ও বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে
বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালানোকে সরকারের দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলায়ও বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ থেকে এপর্যন্ত বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় দুইশ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে দেশের মানুষের ভালো-মন্দ তোয়াক্কা না করে কেবলমাত্র নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতেই সরকার বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালানোকে দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।’
শুক্রবার (১১ জুন) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ও নিপুণ রায় চৌধুরীকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে নিপুণ রায়ের বাবা অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, শ্বশুর গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম বা তাদের কোনো কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলায়ও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে তাদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে।’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীকে গত ২৮ মার্চ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৩ এপ্রিল পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তার কারাবাস অন্যায়ভাবে দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। আবারও তাকে নতুন মামলা, মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।’
কারাবন্দি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাকে গত পাঁচ বছর মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় গ্রেফতার করে কারান্তরীণ রাখা হয়েছে। যখনই তিনি আদালত থেকে জামিন লাভ করেন, তখনই নতুন-পুরনো বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাবাস দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতিদিনই গ্রেফতার, কারান্তরীণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া চলমান রাখা হয়েছে। লকডাউনের মধ্যেও গ্রাম-শহর, পাড়া-মহল্লায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে মুখ খুলতে না পারে সেজন্যই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালানোকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়েছে সরকার।’
মির্জা ফখরুল অনতিবিলম্বে নিপুণ রায় চৌধুরী, আসলাম চৌধুরীসহ দেশব্যাপী গ্রেফতার হওয়া বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
এএইচআর/এসএসএইচ