দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতেই সংস্কার প্রয়োজন

দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার স্বার্থেই পরিবর্তন দরকার, সংস্কার দরকার। সংস্কার বা পরিবর্তন করা মানেই নতুন করে সাজানো, গোছানো। দেশের মালিকানা দেশের জনগণ অর্থাৎ আপনাদের কাছে ফেরত দিতেই সংস্কার করতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
বিজ্ঞাপন
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত চলমান গণইফতারের ২৩তম দিনে সোমবার (২৪ মার্চ) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে রাষ্ট্র আকারে আমরা গড়ে তুলতে পারিনি। যার ফলে এই রাষ্ট্র নাগরিকের কোনো অধিকার দেওয়ার পরিবর্তে অধিকার হরণে ব্যস্ত ছিলো। ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। তাই আমরা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছি।
বিজ্ঞাপন
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা এমন সংস্কার করতে চাই যাতে কেউ ক্ষমতায় এসেই তার খেয়াল খুশি মতো আপনাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে।
প্রধান অতিথি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারা কি ১৪, ১৮ ও ২৪ শে ভোট দিতে পারছেন? এ সময় উপস্থিত জনতা সমস্বরে না সূচক ধ্বনি দিয়ে জানান দেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমরা দেশটাকে আর ভোটারবিহীন সংস্কৃতিতে রাখতে চাই না। সংস্কারের যে সুপারিশগুলো করা হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণইফতার কার্যক্রমে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত আলোকচিত্র শিল্পী ড.শহীদুল আলম এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান মোহাম্মদ শামসুদ্দিন শামস।
পার্টির নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আবদুল হক সানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব শফিউল বাশার ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুর রব জামিল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শহীদুল আলম বলেন, এই গণইফতারে আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। এই ধরনের প্রোগ্রাম আমাকে অভিভূত ও আবেগতাড়িত করে। অধিকাংশ দল ও মানুষ রাজনীতিই করেন ক্ষমতা প্রদর্শন ও অর্থ উপার্জন করার জন্য। একটি রাজনৈতিক দলের আদর্শ যে এভাবে প্রকাশ করা যায় তা এবি পার্টিকে না দেখলে বোঝা যেতো না।
তিনি বিভিন্ন দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষের ক্ষতি বা জনদুর্ভোগ তৈরি করা যাবে না।
তিনি জনগণের সমঅধিকার নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই জন্যই আমরা দীর্ঘ সময় ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। সমতার কারণেই আমি গাড়ি না ব্যবহার করে সাইকেল ব্যবহার করি।
ইসরায়েলি গণহত্যা কোনোভাবেই কাম্য নয় উল্লেখ করে বলেন, সভ্য বিশ্বে এমন বর্বরতা চলতে পারে না।
সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, সবার আগে গণহত্যার বিচার করতে হবে, চুরির টাকা ফেরত নিয়ে আসতে হবে, আমাদের সন্তান হত্যার বিচার করতে হবে। বিচার নস্যাৎ করতে একটি চক্র কাজ করছে।
তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দ্যেশ্যে বলেন, খাবারের কষ্টের জন্যই আপনারা এখানে এসেছেন। রাষ্ট্রের কাছে আপনাদের অনেক পাওনা আছে। রাষ্ট্র সেই পাওনা দিচ্ছে না। রাষ্ট্র সেই পাওনা বুঝিয়ে দিলে আপনাদেরকে এই গণইফতারে আসতে হতো না বলে মত দেন তিনি।
জেইউ/জেডএস