‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ প্লাটফর্মের আত্মপ্রকাশ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ নামে একটি প্লাটফর্মের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ করার আগ পর্যন্ত এই প্লাটফর্মের কর্মসূচি চলবে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেল সোয়া ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই প্লাটফর্মের ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জোবায়ের।
এর আগে বিকেল সোয়া ৩টায় ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই’ বলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা৷
আরও পড়ুন
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের আগে লড়াই চালিয়ে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা স্লোগান দেন, আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; আওয়ামী লীগের /হাসিনার/র এর দালালেরা হুশিয়ার সাবধান; ইন্টেরিম, সাবধান; উপদেষ্টার বক্তব্য, প্রত্যাহার করতে হবে; অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে, নিষিদ্ধ করতে হবে; আওয়ামী লীগের বিষদাঁত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও।
বক্তারা বলেন, আমরা আয়না ঘরের ভেতর দিয়ে এখানে এসেছি। আমরা তো জুলাইয়ে শহীদ হয়েছি, আমাদের কিসের ভয়? আমাদের দেহে যতক্ষণ পর্যন্ত রক্ত আছে ততক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। জুলাইয়ে যারা রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে তাদের লাল রক্ত দিয়েই আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে৷ আমরা জীবন দেব কিন্তু জুলাই দেব না৷ আমরা শহীদদের সঙ্গে বেঈমানী করবো না৷ শহীদ ভাইদের প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত, খুনি হাসিনার ফাঁসির আগ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না৷
এ বি জোবায়ের বলেন, আজ অভ্যুত্থানে ৭ মাস পরে এসে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে কেন আমাদের মাঠে নামতে হচ্ছে? যারা ২ হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে, যারা গত ১৬ বছরে দেশকে ধ্বংস কিরে দিয়েছিলো এত কিছুর পরও তাদের নূন্যতম অনুশোচনা নেই। তারা আমাদের এখনো হুমকি দিয়েই যাচ্ছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা নেই। প্রধান উপদেষ্টা, আপনাকে আশ্বাস দিতে চাই আপনার পাশে আমরা আছি৷ আপনি প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করে দেখুন। সবাই চায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিন। নাহলে আপনি কেন এই বক্তব্য দিয়েছেন তার সঠিক জবাব দিন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আপনারা যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারেন তাহলে আর কেউ সেটা পারবে না৷
নতুন প্লাটফর্মের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আমরা আবার এক হবো। “গণহত্যাকারী আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ” নামের একটি প্লাটফর্মের আমরা ঘোষণা করছি। যতদিন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হবে আমাদের প্লাটফর্ম ততদিন পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করে যাবে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার আগ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাবো না। আমরা এই প্লাটফর্মের অধীনে লাগাতার কর্মসূচি পালন করবো।
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, আগামীকাল ২২ মার্চ বিকেল ৫টায় ‘গণহত্যাকারী আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’-এর আয়োজনে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে ও জুলাই অভ্যুত্থানের বিচার্র দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণ ইফতার কর্মসূচি করবো।
কেএইচ/এমএসএ