জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ (৩০ মে)। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামে একদল বিপথগামী সেনাকর্মকর্তাদের হাতে হত্যার শিকার হন তিনি। দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাতের দিনটিকে স্মরণ করতে ১৫ দিনের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উইং থেকে জানা যায়, জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উইংয়ে সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই তিনি রাষ্ট্রপতি থাকাকালে সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যদের গুলিতে প্রাণ হারান। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান।
জিয়াউর রহমানের দুই ছেলের একজন তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আরেক সন্তান আরাফাত রহমান কোকো যিনি ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় মারা যান। বড় ছেলে তারেক রহমানের পরিবারের মতো লন্ডনেই বসবাস করছেন কোকোর পরিবার।
জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘জাতির ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব ছিল অবিস্মরণীয়। তিনি সব সংকটে দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধের ময়দানে বীরোচিত ভূমিকা ও একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে তার অনবদ্য অবদানের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।’
স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রারম্ভে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ যখন দিশেহারা ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উজ্জীবিত করেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এই ঘোষণায় দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ মরণপণ যুদ্ধে শামিল হয়।’
বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে ৩০ মে ও ৩১ মে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ ও ঢাকা মহানগরীর ৪০টি স্থানে দরিদ্র মানুষদের খাবার বিতরণ।
এছাড়াও জিয়ার জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী হবে। ১ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা হবে। ৯ জুন জিয়ার ওপরে প্রকাশিত বইয়ের প্রদর্শনী হবে। ১ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত সারা দেশে সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় শেরেবাংলা নগর তার মাজারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এছাড়া রোববার সকাল থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় খাদ্য বিতরণ করা হবে। এদিন বিকেলে ভাটারায় খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুকও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
পরদিন সোমবার (৩১ মে) যথারীতি মির্জা ফখরুল ধানমন্ডি এলাকায় মহানগর দক্ষিণ ব্যানারে খাদ্য বিতরণ করবেন। একইদিন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও উপদেষ্টা আবদুস সালাম খাদ্য বিতরণ করবেন।
স্বাভাবিক সময়ে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর দিনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খাদ্য বিতরণ করলেও গত কয়েক বছরে তা পাল্টেছে। এবার তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে রয়েছেন। শনিবার (২৯ মে) হাসপাতালে তার ৩২তম দিন পার হয়েছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমের একজন সদস্য জানান, তার শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। শুক্রবার রাতে জ্বর আসলেও শনিবার (২৯ মে) তা কিছুটা কমে এসেছে।
এএইচআর/ওএফ