খালেদা জিয়ার কিডনি ও হার্টের জটিলতা ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কিডনি ও হার্টের জটিলতা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। এ দুই জটিলতাতেই তিনি বেশি ভুগছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশে এই দুটো রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব উন্নত নয়। এজন্য তার বিদেশে চিকিৎসা নেওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি এখনো তার ফুসফুস থেকে পানি বের হচ্ছে। কিন্তু সেটা এত গুরুতর নয়।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলবেন। এ বিষয়ে আমার কথা বলা নিষেধ আছে। চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করে যাচ্ছেন।
তবে খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আব্দুস সাত্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। তার কিডনি ও হার্টের জটিলতা ওঠানামার মধ্যে আছে।
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুস সাত্তার বলেন, তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার তো অনুমতি দিলো না। এখনো সেই অবস্থায় আছে। বিদেশে চিকিৎসা নিতে নেওয়ার ব্যাপারে নতুন করে কোনো অগ্রগতি নেই।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খালেদা জিয়ার কিডনি ও হার্টের অবস্থা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে লন্ডনে চিকিৎসা নিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সেখানে তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও পুত্রবধূ চিকিৎসক জোবাইদা রহমান আছেন। আছেন ছেলে তারেক রহমানও।
তিনি আরও বলেন, মেডিকেল বোর্ড সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈঠক করে। সেখানে তার অন্যান্য শারীরিক অবস্থার রিপোর্টগুলো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলেও কিডনি ও হার্টের রিপোর্ট নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারছি না। তাই আমরা তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।
করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২৮ দিন ধরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। এরমধ্যে গত ২২ দিন ধরে তিনি সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। অবশ্য এরই মধ্যে করোনা নেগেটিভ হয়েছেন খালেদা জিয়া।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একটি সূত্র জানায়, চিকিৎসকরা প্রতিদিনই খালেদা জিয়ার চিকিৎসার আপডেট বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও ভাই শামীম ইস্কান্দারকে অবহিত করেন। গত এক সপ্তাহে চিকিৎসকরা তার কিডনি ও হার্টের জটিলতার বিষয়টি নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তারা যত দ্রুত সম্ভব তার বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা তো সরকারের কাছে অসহায়।
সূত্রটি আরও জানায়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়টি সরকারও জানে। কিন্তু কেন সরকার তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দিচ্ছে না এটা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা এখনো আশা করছি, উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে সরকার তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেবে।
এএইচআর/এনএফ/জেএস