বৈষম্য দূর করতে না পারলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না: সাইফুল হক

রাষ্ট্র ও সমাজে বৈষম্য বিলোপে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো মনোযোগ দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংস্কারে সরকারের যত আগ্রহ, সমাজের সীমাহীন বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের তেমন আগ্রহ নেই। অথচ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য দূর করতে না পারলে রাজনৈতিক সংস্কার তেমন কোনো কাজে দেবে না, রাজনৈতিক সংস্কার টেকসইও হবে না।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘বর্ধিত ভ্যাট ও করের বোঝা থেকে মানুষকে রক্ষা কর, আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা নিপীড়ন রুখে দাঁড়াও’ বিষয়ক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক।
সাইফুল হক বলেন, আমলাদের প্রভাবে একের পর এক জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আমলারা সরকারকে জিম্মি করে ফেলছে কি না সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যে আমলাদের সঙ্গে ছাত্র শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানের কোনো সম্পর্ক ছিল না, তাদের পরামর্শে সরকারকে ভুল করলে চলবে না।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, বাজার পরিস্থিতি এখনো অনেকটা বেসামাল। সরকার কোনোভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সাড়ে পাঁচ মাস পর বাজার নিয়ন্ত্রণে এখন জনগণ সরকারের আর কোনো অজুহাত শুনতে চায় না। মানুষকে স্বস্তি আর নিরাপত্তা দিতে না পারলে ভালো রাজনৈতিক সংস্কারও মানুষ গ্রহণ করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আমলাতান্ত্রিকভাবে পণ্যের ওপর ভ্যাট ও কর আরোপের সিদ্ধান্ত বাজারের আগুনে পুড়তে থাকা মানুষের ওপর বিপদ চাপিয়ে দেওয়ার শামিল। এসব পদক্ষেপ একদিকে গরিব ও স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আরও ঝুঁকিতে ফেলে দেবে। আর অন্যদিকে শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পেলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে, বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। আইএমএফের পরামর্শে নেওয়া নিত্য ব্যবহৃত পণ্যের ওপর ভ্যাট ও কর বৃদ্ধির আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে সরকারকে।
সাইফুল হক আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এ হামলা আক্রমণকারী গণঅভ্যুত্থান, দেশবিরোধী শক্তি। এদের তৎপরতা হিংসা ও বিভাজনের রাজনীতিকে আরও উসকিয়ে দেবে। অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড, বিজয়নগর হয়ে সেগুনবাগিচায় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
এমএইচএন/এসএসএইচ