শেখ হাসিনা পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চেয়েছেন
শেখ হাসিনা পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সবচেয়ে দামি ফ্ল্যাট তার ভাগনের নামে, যিনি আবার ইংল্যান্ডের এমপি। সেগুলো এখন বেরিয়ে আসছে পত্র-পত্রিকায়। যার কারণে একজন মন্ত্রী হিসেবে তার ওপর যে দায়িত্ব ছিল সেটি পালন না করতে নিষেধ করেছে সেই দেশের সরকার।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন রিজভী। খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী রিকশা, ভ্যান ও অটোচালক দল।
রিজভী আরও বলেন, তাকে (টিউলিপ) এই ফ্ল্যাট কে দিয়েছে, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। আর এ কারণে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখতে হবে, যাতে শেখ হাসিনার মহা দুর্নীতিগুলো নিয়ে কেউ কথা বলতে না পারে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
বিএনপির এ নেতা বলেন, পূর্বাচলে শুধু শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে ৬০ কাঠা জমি। তার মধ্যে শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের নামে ১০ কাঠা। বাংলাদেশের যেখানে যে জায়গা তার পছন্দ হয়েছে, সেটাই শেখ হাসিনা আত্মসাৎ করেছেন নামমাত্র একটা আইনি কাঠামোর মধ্যে। সেই আইনি কাঠামো কি? শেখ হাসিনার তৈরি করা। শেখ হাসিনা চাইলে রাজউকের ঘাড়ে কি দুইটা মাথা আছে যে তারা না করতে পারবে।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনার সুদাসদন ও গোপালগঞ্জে বাড়ি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারপর ৬০ কাঠা জমি তার এবং তার বোন, মেয়ে, ছেলের নামে। সম্পদের পর সম্পদ তার। এটা আমার কথা নয়, তথ্য-প্রমাণসহ খবর প্রকাশ হয়েছে। ৮০ হাজার কোটি টাকা শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে।
রিজভী দাবি করেন, শেখ হাসিনার লুটপাটের সঙ্গী সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, অন্যদের কথা তো বাদই দিলাম। শুধু শেখ হাসিনা, পুতুল, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও ববির নামে পাচার হয়েছে ৮০ হাজার কোটি টাকা।
শেখ হাসিনা অন্যায়, অবিচারকে তার আঁচলের নিচে রেখে দুঃশাসন কায়েম করেছিলেন বলে দাবি করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার যোগসাজশে বাংলাদেশের সীমান্তের ১৬০টি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যেভাবে ভারতকে সুবিধা দিয়েছে, সেই সুবিধার কারণে তারা অসম কাজগুলো করেছে। দুটি স্বাধীন দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যে কাজগুলো করা যায় সেটা না করে জোর করে কাঁটাতারের বেড়া লাগিয়েছে ভারত। আপনাদের আমরা বলে রাখি, ১৬০টি জায়গায় শুধু শেখ হাসিনা সুবিধা দেওয়ার কারণে আমাদের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে ভারত।
তিনি আরও দাবি করেন, আমাদের যে সীমান্ত ৪ হাজার ৬শ কিলোমিটারের, তার মধ্যে তিন হাজারের বেশি কিলোমিটারজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে… ৮৫৬ থেকে ৮৫৭ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া বাকি আছে। আন্তর্জাতিক যে নিয়ম, বিধিবিধান এবং দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে, আলাপ-আলোচনা হয়েছে সেটাও মানছে না… যে শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজ সীমানার মধ্যে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা হবে না… হতে গেলেও দুই দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করতে হবে… সেটাও না মেনে তারা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছে লারমনিরহাটসহ বিভিন্ন জায়গায়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এর জন্য যে জনগণ দাড়াতে পারে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীর প্রতিরোধের সঙ্গে, এই দৃষ্টান্ত শেখ হাসিনার আমলে তিনি করতে দেননি। ফ্যাসিজম দিয়ে, তার নির্দয়তা দিয়ে, তার নির্মমতা দিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) ভারতের দাস হয়ে কাজ করেছেন।
আলমগীর হোসেন মন্টুর সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মাহবুবুর রহমান সুমন, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীসহ অটোরিকশা ভ্যান শ্রমিকরা বক্তব্য দেন।
এএইচআর/এসএসএইচ