ফারুকের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায় অভ্যুত্থানে আহতরা
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ সভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসানের ওপর হামলার পিছনের কারণ খুঁজে বের করা এবং হামলার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের একাংশ। একইসঙ্গে তাদের দাবি, ‘একজন মানুষ আরেকজন মানুষের ওপর এমনিতেই হাত তুলবে না। নিশ্চয়ই এর পিছনে কিছু না কিছু ঘটেছিলো। তাই মূল ঘটনা খুঁজে বের করা উচিত।’
সোমবার (৬ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ফারুক হাসানের ওপর হামলার দায় জুলাই অভ্যুত্থানের সব আহত এবং শহীদ পরিবারের ওপর চাপানোর প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আহত শিক্ষার্থী মো. সৌরভ ইসলাম।
তিনি বলেন, নূর ভাইদের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। তারাও ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের সুষ্ঠু বিচার হোক। ওই হামলার ঘটনায় আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এ সময় হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে দুজনের আটক প্রসঙ্গে সৌরভ ইসলাম বলেন, আটকরা যদি হামলায় দায়ী হন, তাহলে কিছু বলার নেই। অন্যায় যে করে এবং অন্যায় যে সহে দুজনেই সমান অপরাধী। আমরা এটা মানি। যদি তারা অন্যায় করে থাকেন তাহলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সেটি অ্যাপ্রিশিয়েট করি। তবে আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, তারাও আমাদের আহত ভাই। আমরা তাদের ফেলে দিতে পারবো না।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি এটি নিয়ে আপনারা কাজ করেন, হামলার পেছনে কি কারণ, কারা-কেন হামলা করেছে সেটি আপনারা খতিয়ে দেখুন। তবে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন, যেহেতু তার ওপরে আহতরা হামলা চালিয়েছে, তার মানে অবশ্যই কিছু না কিছু হয়েছে। একটা মানুষ আরেকটা মানুষের ওপর এমনিতেই হাত তুলবে না। নিশ্চয়ই কিছু না কিছু ঘটেছে। এটি আপনারা খুঁজে বের করুন এবং সবার সামনে প্রকাশ করুন।
এর আগে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নাগরিক সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় রাজধানীর চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন— মোহাম্মদ আবীর আহমেদ শরীফ ও কোরবান শেখ হিল্লোল। এই দুজনকে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমাবেশে হামলার দিন নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতরা জানান, সেনাবাহিনীর আশ্বাসেই তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করেছেন। এ সময় ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তারা।
প্রসঙ্গত, রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গত শনিবার জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান আহত হন। হামলাকারীদের মারধরে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম ও এস এম রাফসানযানি, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম সাকিব, সলিমউল্লাহ ও হিযবুল্লাহ আহত হয়েছেন।
ফারুক হাসান জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আয়োজনে শহিদ মিনারে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিপ্লবী সরকার না হওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনা করেন।
টিআই/এআইএস