অতীতে দেশ চলত বড় ভাই আর ওপরের নির্দেশে : সেলিম উদ্দিন
দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ঈমান-আকিদা, বোধ-বিশ্বাস, আবেগ-অনুভূতি ও তাহবীজ-তামুদ্দনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সকল প্রকার বিভেদ ভুলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাজধানীর দারুসসালামে গোলারটেক ঈদগাহ মাঠের পূর্ব গেটে থানা জামায়াত আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
থানা আমির হেকিম আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আবু হানিফের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম ও সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ডা. মঈন উদ্দিন, মনিরুল ইসলাম মৃধা, জি এম হাফিজুর রহমান, আব্দুল্লাহ মুয়াজ প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও প্রাণের বিনিময়ে দেশে এক ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং আমরা উন্মুক্ত পরিবেশে আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ লাভ করেছি। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের আশঙ্কা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। কারণ পতিত স্বৈরাচারের প্রতিভূরা এখনো ঘাপটি মেরে রয়েছে। জনপ্রশাসনেও তাদের উপস্থিতি আছে। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত ও বিভক্ত করে অর্জিত বিজয়কে নস্যাৎ করার চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া স্বাধীনতা পরবর্তী ৫৩ বছরের শাসকগোষ্ঠী এই কাজটিই করেই নিজেদের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়ত করার অপচেষ্টা করে এসেছে। দেশ চলত বড় ভাই আর ওপরের নির্দেশে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, অর্জিত বিজয়কে কাজে লাগিয়ে আমাদেরকে সে অশুভ বৃত্ত থেকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় বিপ্লবীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের সকল অবকাঠামো ও রাষ্ট্রের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ব্যাংক ও শেয়ার মার্কেট লুট করে দেশে এক নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং জাতিকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা দেশ থেকে অর্থপাচার করে কানাডার বেগম পাড়া বানিয়েছে। কিন্তু ৩৬ জুলাইয়ের বিপ্লবের মাধ্যমে সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তাই বিপ্লবীদের কোনো অবস্থায়ই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশে রাজনৈতিক হানাহানিকে আর কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। বিরোধিতা করলেই রাজাকার, জঙ্গিসহ নানাবিধ অপবিশেষণে বিশেয়াষিত করে জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে। তাই এই অশুভ চর্চাকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না, বরং যারা এসব করবে তাদের আওয়ামী লীগের মতোই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে।
তিনি আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়তে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ছাত্র-জনতার তাজা রক্তের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাদের প্রাণের বিনিময়েই আমরা উন্মুক্ত স্থানে সমবেত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। তাই জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মানিত করতে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য দেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমাদের নতুন করে শপথ গ্রহণ করতে হবে।
জেইউ/এসএসএইচ