এক ফ্ল্যাট নিয়ে ছাত্রদল-কৃষক দল-আ.লীগ নেতার টানাটানি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়ার ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা বিদ্যুৎ বড়ুয়ার হয়ে ফ্ল্যাট দখলের চেষ্টা করেছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা। আবার ক্ষমতা দেখিয়ে দখলে রাখা হয়েছিলে অভিযোগ করে ফ্ল্যাটটি নিজের দাবি করেছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এম সাইফুদ্দিন সৈয়দ। ফলে এক ফ্ল্যাট নিয়ে তাদের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন বিদ্যুৎ বড়ুয়া। চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানার খুলশী আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডের সাইফভ্যালি ভবনের ফ্ল্যাটটিতে থাকতেন বিদ্যুৎ বড়ুয়া নিজেই। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।
গত ২৯ ডিসেম্বর বিকেলে ফ্ল্যাটটির দখল পুনরুদ্ধার করতে আসেন বিদ্যুৎ বড়ুয়ার পিএস শেখ মোহাম্মদ ফারুক চৌধুরী ও পলিটেকনিক ছাত্রদলের সাবেক নেতা মো. রানার বাহিনী। এসময় রানার স্ত্রীও সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু সাইফভ্যালির মালিক কৃষকদলের নেতা মো. সাইফুদ্দিন এতে বাধা দেন। এ অবস্থায় মো. রানা মোবাইলে তার লোকজনকে ওই ভবনের সামনে জড়ো করেন। যাদের অধিকাংশই পলিটেকটিক ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পরিচয় দেয়।
মুহূর্তেই জড়ো হয় শতাধিক লোক। ওই ভবনের ঢোকার জন্য ভবনের মালিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা চলে রানা ও তার লোকজনের। পরে খুলশী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এতেও রানার লোকজন নিবৃত্ত না হলে ভবন মালিক সেনাবাহিনী ডাকার কথা বললে রানা ও তার লোকজন ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন। পুরো ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। এ ঘটনায় ওইদিনই সাইফুদ্দিন নগরীর খুলশী থানায় একটি জিডি করেছেন।
এ বিষয়ে এম সাইফুদ্দিন সৈয়দ বলেন, আমার ভবনের ওই বাসাটিতে বিদ্যুৎ বড়ুয়া জোর করে থাকতেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনি চলে যান। উল্লিখিত দিন বিদ্যুৎ বড়ুয়ার পিএস ফারুক ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা পরিচয়দানকারী মো. রানা দলবল নিয়ে আমার ভবনের সামনে এসে ওই বাসায় ওঠার চেষ্টা করে। আমি বাধা দেই। এ ঘটনায় আমি থানায় জিডি করেছি।
একই বিষয়ে বিদ্যুৎ বড়ুয়ার পিএস ফারুক বলেন, বাসাটি দাদার ছিল। এ কারণে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।
ছাত্রদলের সাবেক নেতা মো. রানা বলেন, আমি বাসাটি বিদ্যুৎ দাদা থেকে বায়না করেছি। ৫ আগস্টের পর বিদ্যুৎ বড়ুয়া বিদেশে চলে গেছেন। কীভাবে বায়না করলেন জানতে চাইলে রানা সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে মিডলম্যান তাকে বেকায়দায় ফেলেছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিদেশে অবস্থানরত বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, বাসাটি আমার। ভাড়াটিয়া হিসেবে আমি মো. রানাকে সেখানে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু ভবন মালিক এতে বাধা দিয়েছে। আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে আমি খুলশী থানায় জিডি করেছিলাম।
জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
এমআর/জেডএস