দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে দেশকে সংকট থেকে উদ্ধার করতে হবে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান সংকট উত্তরণে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন দেওয়াই বর্তমান সংকটের একমাত্র সমাধান। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে দেশের মানুষকে এ সংকট থেকে উদ্ধার করতে হবে।’
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে জাতীয়তবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ‘অনলাইনে’ সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
আরও পড়ুন
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ন্যূনতম যেসব সংস্কার করা দরকার সেগুলো শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আবার শুরু হয়েছে। অতীতে বিএনপিকে ভাঙার অপচেষ্টা বহুবার হয়েছে, কিন্তু ভাঙতে পারেনি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে আবার সেই চক্রান্তের খেলা শুরু হয়েছে। যেটা অতীতেও হয়েছে বহুবার। বাংলাদেশ নিয়ে আবার দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যারই ফলে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হারিয়েছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে, যার ফলে তারেক রহমানকে এখনো পর্যন্ত বিদেশে থাকতে হচ্ছে। এই চক্রান্ত আবার শুরু হয়েছে।’
এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না বলে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিনই তাদের চক্রান্ত সফল হতে দেবে না। বিএনপিকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা বহুবার হয়েছে। কখনোই ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়নি। বিগত তথাকথিত নির্বাচনের সময়ও চেষ্টা হয়েছে, একটা ছাড়া দুইটা লোককে তারা সরিয়ে নিতে পারেনি। কারণ, বিএনপির যে রাজনীতি, এটা এ দেশের মানুষের রাজনীতি। সে রাজনীতি কী, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র—এই তিনটি জিনিসের ওপর বিএনপির রাজনীতি, মূল ভিত্তি।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আজকে যারা বলছেন বিএনপি সংস্কার চায় না, তারা ইতিহাস ভুলে গেছেন। ৩১ দফা নিয়ে আমাদের নেতারা গ্রামে-গ্রামে গেছেন এবং এখনো যাচ্ছেন।’
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় সংস্কারের মধ্যদিয়ে বিএনপির জন্ম হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বজায় রেখে সংস্কারের বিষয়টি আনতে হবে। সংস্কারের নাম করে এমন কিছু হতে দিতে পারি না, যেটা আমাদের গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্রদল হচ্ছে আমাদের ভ্যানগার্ড। তাদের এখন জ্ঞানভিত্তিক রাজনীতি করতে হবে। সবচেয়ে যেটা প্রয়োজন, আমাদের সাইবার যুদ্ধ করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের অবস্থান বেশি করে রাখতে হবে। এটি যদি করতে না পারি, তাহলে আমরা এই যুদ্ধে হেরে যাব। মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমাদের অ্যাকটিভিটি বাড়াও। দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে মেধা-বুদ্ধি দিয়ে রুখে দাঁড়ানো।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি তারেক রহমান ছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে শামসুজ্জমান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমান, খায়রুল কবির, নাজিমউদ্দিন আলম, শহীদউদ্দীন চৌধুরী, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন, আবদুল কাদের ভূঁইয়া, হাবীবুর রশীদ, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।
এমএসআই/এসএম