‘সুশীলগিরি ছেড়ে দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন’
সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, সুশীলগিরি ছেড়ে দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন। স্বৈরাচারের দোসরদের সব ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে বাঁচান। দেশের জনগণকে বাঁচান।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি এই অনুরোধটি করেছেন।
পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পরে একটার পর একটা ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রথমে জুডিশিয়াল ক্যুর চেষ্টা করা হলো। ছাত্ররা মাঠে নেমে সেটা রুখে দিলো। লীগ যখন আনসার হয়ে ফিরে আসছিল, এই ছাত্ররাই তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মাঠে নেমেছে। এনসিটিবিতে বই না ছাপিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র হলো, সেটাও ছাত্ররা প্রতিহত করল।
আরও পড়ুন
‘এখন যখন স্বৈরাচার হাসিনাকে সার্ভ করা দালাল মিডিয়া, সময় টিভির ক্যু রুখে দেওয়ার জন্য ছাত্ররা এগিয়ে আসলো, তখনই চারদিকে শুরু হলো সুশীলদের আহাজারি। আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বাস্তবতাবিবর্জিত মিথ্যা ছড়ানো হলো। আমরা বারবার বলেছি যে আমরা কোনো সাংবাদিকদের লিস্ট দেইনি। অথচ এরপরেও পুরোপুরি বানোয়াট অভিযোগ তুলে আমাদের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাফিয়ারা ক্যু করল। যে সময় টিভি যুগের পর যুগ বিএনপি, জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর ক্যারেকটার এসাসিনেশন করেছে, শহীদ আলিফকে হিন্দু ট্যাগ দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করেছে, জুলাই আন্দোলনকে টেরোরিস্টদের উত্থান বানিয়ে হাসিনার ছাত্র হত্যাকে নর্মালাইজ করেছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা অভিযোগ করে ইমেজ নষ্ট করেছে, এমনকি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকে ডিলেজিটিমাইজ করার অ্যাটেম্পট পর্যন্ত নিয়েছে, আজকে তাদের জন্য সুশীলদের মায়া কান্নার শেষ নেই। প্রতিবাদ করতে যাওয়া ছাত্ররা আমরা হলাম খারাপ, আর এদের কুকীর্তিকে সমর্থন দেওয়া সুশীলরা হয়ে গেল ভালো। এই সুশীলরাই কি গত ষোল বছর স্বৈরাচারের নুন-ঘি খেয়ে ফ্যাসিবাদকে পাকাপোক্ত করেনি? আমরা তো সেটার বিরুদ্ধেই কথা বলেছি।’
এখন ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা শেখ হাসিনার দোসরদের অপসারণ করে প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু সুশীলগিরি দেখিয়ে সরকার সেটি না করার পরিণতি গতকাল রাতে আমরা পেলাম। সরকারের কাছে অনুরোধ সুশীলগিরি ছেড়ে দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন— পোস্টে লেখেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই আহ্বায়ক আরও লেখেন, সরকার দুই হাজার মানুষের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় বসা সরকার। এই সরকার সুশীলতার মধ্যে দিয়ে আসেনি, এসেছে ২ হাজার শহীদ আর ৩০ হাজার আহত ভাই বোনের রক্তের ওপর দিয়ে। সেই রক্তের সাথে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য, প্রশাসনলীগের হুমকি আর আগুন দেখার জন্য নয়। সরকারের কাছে অনুরোধ এদের হাত থেকে প্রশাসন মুক্ত করেন। যদি না করেন তবে গণভবন আর আদালতের মতো সচিবালয় কেমন করে আওয়ামী মুক্ত করতে হয় সেটা ছাত্র জনতার খুব ভালো করেই জানা আছে।
এমএসআই/এমএ