লজ্জাজনক পতন-পলায়নের পরও খাসলত বদলায়নি আওয়ামী লীগের
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী শাসনামলে দেশকে অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে; কিন্তু লজ্জাজনক পতনের পর পলাতক অবস্থাতেও খাসলত বদলাতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
সোমবার(৯ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াত আয়োজিত এক সুধী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবু নাহিদের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন,ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “বিগত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী বাকশালীরা দেশে তান্ডব চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমেই আমরা দেশে মুক্ত পরিবেশ পেয়েছি। ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে তাদের সকল চক্রান্ত মাটির সাথে মিশে দিয়েছে। যা আমরাও কল্পনা করিনি এবং তা পতিত স্বৈরাচারেরও কল্পনার বাইরে ছিল বরং সবকিছুই হয়েছে আল্লাহ তা’য়ালার পরিকল্পনা মাফিক।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “তারা মানুষের রক্ত নিয়ে খেলেছে। তারা ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। এরপর পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ৫৭ জন দেশপ্রেমী ও চৌকস সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করার পর জামায়াতের শীর্ষনেতাদের কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে একের পর এক নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি আলেম-উলামা সহ মাদ্রাসা ছাত্ররাও। কিন্তু ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই অপশক্তির লজ্জাজনক পতন হয়েছে। তিনি আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।”
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা পলাতক অবস্থায় ভারতে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে। আর এরাই নিকট অতীতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করেছিল। মূলতঃ এদের হাত থেকে কোন শ্রেণি-পেশার মানুষই রেহাই পায়নি। তারা জামায়াতের শীর্ষনেতাদের ফাঁসির মুখোমুখি করে অপরাধ স্বীকারপূর্বক প্রাণভিক্ষা চাওয়ার মুখোমুখি করেছিল। কিন্তু তারা হিমালয়ের মত অবিচল থেকে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। এতে দেশ ও জাতিও সম্মানিত হয়েছে।
তিনি আগস্ট শহীদদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারমুক্ত দেশ গড়তে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। তাই এই ঐক্য ধরে রাখার জন্য সকলকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় ফ্যাসীবাদী অপশক্তি অবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
জেইউ/এসএমডব্লিউ