ইসকনের ব্যানারে আ.লীগ আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করেছে : সাকি
ইসকনের ব্যানারে আওয়ামী লীগ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, ইসকনের ব্যানারে করা হয়েছে, যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর দায় চাপে এবং মুসলিমরা খেপে হামলা করেন। যাতে হামলার ছবি তারা আমেরিকায় পাঠিয়ে দিতে পারে। আমরা দেখলাম, রয়টার্সের মতো সংবাদমাধ্যমে সংবাদ ছাপা হয়েছে যে চিন্ময় দাসের আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। এই হচ্ছে তাদের পরিকল্পনা। বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে পশ্চিমা দেশের কাছে এমনভাবে হাজির করার চেষ্টা করা হচ্ছে যে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী এখানে নিরাপদ নয়।
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি মাঠে এক গণসংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলা শাখা এ আয়োজন করে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায়, মানুষের চিন্তা, বিবেক এবং মতের স্বাধীনতায় কোনো হস্তক্ষেপ করা যাবে না। পত্রিকার সমালোচনা করুন, সেই অধিকার সবার আছে। কিন্তু কোনো পত্রিকা অফিসে হামলা বা এ ধরনের কাজ করা আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি করছে যে এ দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। এটি আমাদের জন্য ভালো হবে না।
আরও পড়ুন
শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছেন। চট্টগ্রামে কোনো হামলা হতে দেননি। এই যে হামলা হচ্ছে না, তার ফলে আওয়ামী লীগের লোকজন নিজেরাই এখন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করছে। তাই সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করবে, তারা ফ্যাসিস্টদের দোসর, দেশি-বিদেশি এজেন্ট। তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকে, এই সরকারকে ধ্বংস করতে চায়।
জনগণ ক্ষমতার কেন্দ্র উল্লেখ করে সাকি বলেন, জনগণ সরকার নির্বাচিত করেন। সরকারকে, জনপ্রতিনিধিকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এর জন্য সংবিধান ও আইন তৈরি করা দরকার। ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার করতে হবে। সাংবিধানিক পদে কেবল সরকার নিয়োগ দেবে না। সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি নিয়োগ দেবে, যাতে যারা নিয়োগ পান, তাদের কোনো দলের প্রতি আনুগত থাকতে না হয়। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করতে হবে।
সরকারের উদ্দেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সবকিছু ঠিক করতে হয়তো পারেননি। আমরা এর জন্য তাদের সমালোচনা করেছি। কিন্তু তারপরও এই অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দায়িত্ব যথাসম্ভব জনগণের স্বার্থ অনুযায়ী পরিচালনা করছে। আমরা তাদের সহযোগিতা, সমালোচনা করব। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য গণতান্ত্রিক সংবিধান, রাষ্ট্রের সংস্কার, আইনের সংস্কার আর গণতান্ত্রিক নির্বাচন দরকার। আসুন আমরা সেই নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হই, গণতান্ত্রিক শক্তি গড়ে তুলি।
গণসংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন— গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. হারুন, ফেনী জেলার সমন্বয়ক কায়কোবাদ, মিরসরাইয়ের আহ্বায়ক শাম্মাসুদ্দীন মোহাম্মদ, সন্দ্বীপের সাংগঠনিক সচিব নাজিম উদ্দীন আরিফ, শিক্ষক প্রতিনিধি রিদোয়ান ফরহাদ, ছাত্রনেতা শওকত ওসমান তৌকির ও ওবায়দুল্লাহ, এম্পাওয়ারিং আওয়ার হিরোজের কলি কায়েয, বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ মান্নান প্রমুখ।
এমএ