‘তিন মাসে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা আ.লীগের দোসরদের উৎখাত করা যায়নি’
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা কোনো একক দলের সম্পদ নয়, তারা জাতীয় সম্পদ। আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাধীনতা পরবর্তী দলীয় সম্পদ বানিয়ে তাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশের ১০০ দিনের অর্জন ও ব্যর্থতা নিয়ে কেউ কেউ আলোচনা করছে। আমি বলবো, বিপ্লব পরবর্তী গত ৩ মাসে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা আওয়ামী দোসরদের উৎখাত করা যায়নি।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ওয়ারী পূর্ব থানা জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পর কেউ কেউ শহীদদের নিজ দলের কর্মী হিসেবে দাবি করছে। নিজ দলের শহীদের সংখ্যা ঘোষণা করছে। অবশ্য আহতদের এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। কারণ তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব দলের ওপর পড়তে পারে। জামায়াতে ইসলামী জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে শহীদদের জামায়াত-শিবির হিসেবে দলীয় পরিচয় দেয়নি, দিতে চায় না। আমরা মনে করি এই আন্দোলনে সব শহীদ ও আহতরা জাতীয় বীর, জাতীয় সম্পদ। তাদেরকে দলীয় কর্মী হিসেবে দেখলে জাতির কাছে তাদের মর্যাদা সীমিত হয়ে যাবে। আমরা চাই জাতীয় বীর, জাতীয় বীরের সম্মানেই থাকুক।
হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ হয়নি উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরের খুঁটি অনেক গভীর ও শক্তিশালী। এদের তালিকা করে সমূলে উৎখাত করতে না পারলে ছাত্র-জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। তাই অন্তবর্তী সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে জামায়াতে ইসলামী পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা দেবে।
শিবিরের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ছাত্র-জনতার অর্জিত বিপ্লবের পর এখন দেখা যায়, কেউ কেউ সভা সমাবেশ করেন কিন্তু মঞ্চে কে নেতা, কে কর্মী বোঝা যায় না। প্রধান অতিথি বক্তব্য দিতে গেলে তার চারপাশে কর্মীরা এমনভাবে তাকে ঘিরে দাঁড়ায় প্রধান অতিথি কে সেটাও বোঝা যায় না। পরে প্রধান অতিথির চেহারার ওপর টিক চিহ্ন দিয়ে ঐ ছবি পোস্ট করে! তারা কোনোভাবে দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারছে না। যাদের নিজ ঘরে, নিজ দলে শৃঙ্খলা নাই, তারা রাষ্ট্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবে না। তারা ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। ক্ষমতা দখল করেই দুর্বার গতিতে লুটপাট শুরু করবে। তারা মানুষের দোকান, বাড়ি-ঘর, হিন্দুদের সম্পদ দখল করে, আমরা মানুষের হৃদয় দখল করি। তারা হিন্দুদের সম্পদ আত্মসাৎ করে আমরা হিন্দুদের আশ্রয়ের ঠিকানা হয়ে আছি এবং থাকবো। চোর-ডাকাতের দল মানুষকে ভয়ভীতি লাগায়, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসলে হাত কেটে দেবে! কিন্তু না এটা জামায়াতে ইসলামীর বিধান নয়, চুরি করলে হাত কেটে দাও এটা আল্লাহর বিধান। চুরি না করলে তো কারো হাত কাটবে না। অপরাধীরা ইসলামকে ভয় পায়। নিরপরাধীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ঠিকানাই হচ্ছে ইসলাম।
ওয়ারী পূর্ব থানা আমির মোতাছিম বিল্লাহ’র সভাপতিত্বে টিকাটুলি শহীদ নবী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সহযোগী সদস্য সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
জেইউ/এমএ