ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে হেফাজতের বিক্ষোভ
ইসকনকে (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান।
নগরের হাজারী লেনে সংঘটিত ঘটনার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশে হাজারী লেনে ওসমান আলী নামের এক ব্যবসায়ীর দোকানে হামলা এবং যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ও অ্যাসিড নিক্ষেপের নিন্দা জানানো হয়। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান হেফাজতের নেতারা।
বক্তারা বলেন, ইসকন নিষিদ্ধ করা না হলে হেফাজতের পক্ষ থেকে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল আন্দরকিল্লা থেকে এসে নগরের জামাল খান চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়।
আরও পড়ুন
চট্টগ্রাম মহানগর হেফাজতে ইসলামের আহ্বায়ক মাওলানা তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন হেফাজত নেতা মাওলানা নুরনবী, আনোয়ার হোসাইনি, সালাউদ্দিন, আশরাফ বিন ইয়াকুব, মো. শহীদ, মো. রব্বানী প্রমুখ।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ওসমান আলী নামের হাজারী লেনের এক ব্যবসায়ীর দেওয়া ইসকনবিরোধী ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই পোস্টের প্রতিবাদে ওসমান ও তার ভাইকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শতাধিক হিন্দু। এই উত্তেজনার মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ছয়টি টহল দল ওই এলাকায় পৌঁছায়। যৌথবাহিনী দুই ভাইকে উদ্ধার করে। আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে আশ্বস্ত করলেও কিছু ব্যক্তি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন।
একপর্যায়ে তারা জুয়েলারি কাজে ব্যবহৃত অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন যৌথবাহিনীর সদস্যদের ওপর। এতে সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যসহ পুলিশের ১২ সদস্য আহত হন। এসময় এক দল ব্যক্তি ইট ছুড়ে সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যানের উইন্ডশিল্ড ভেঙে ফেলেন। পরে যৌথ বাহিনীর ১০টি টহল দল রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাজারী লেন এলাকায় যায়। তখনও একদল ব্যক্তি আবার তাদের ওপর অ্যাসিড সদৃশ বস্তু ছুড়তে শুরু করেন। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটার ঘটনা ঘটে। এসময় ৮২ জনকে আটক করে নিয়ে আসে যৌথবাহিনী। তাদের মধ্যে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তার ৫৩ জন। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে কোতোয়ালি থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয়ের ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। একইদিন ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় পোস্ট শেয়ারকারী ওসমান আলীকে।
আরএমএন/এসএসএইচ