পদত্যাগ নিয়ে নতুন করে প্রসঙ্গ তোলাটা সন্দেহজনক : নজরুল ইসলাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, পদত্যাগ নিয়ে নতুন করে প্রসঙ্গ তোলাটা সন্দেহজনক। এটা একটা দুশ্চিন্তার বিষয় যে, কেন হচ্ছে এটা। এটা সরকারের দ্বায়িত্ব খোঁজ নেওয়া এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা টিভিতে দেখেছি রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানকে পাশে নিয়ে বলেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি (রাষ্ট্রপতি) সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রপতি নিজে যখন জাতির সামনে তিন বাহিনীর প্রধানকে পাশে দাঁড় করিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তারপরে এই নিয়ে আর কোনো কথা থাকে? আর তো কোনো কথা থাকে না। তারপরে দেখলাম প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বলেছেন মা পদত্যাগ করেননি। আবার শেখ হাসিনার এক টেলিফোন কনভারসেশনে আমরা শুনলাম যেখানে তিনি (শেখ হাসিনা) নিজে বলেছেন যেভাবে পদত্যাগ করার কথা আমি সেভাবে পদত্যাগ করি নাই। অর্থাৎ পদত্যাগ করেছেন তিনি। কিন্তু যেভাবে করার কথা ওইভাবে করেননি; তাই তো? তাহলে পদত্যাগ না করার প্রশ্ন তো থাকছে না। পদত্যাগতো হয়েছে। আর যিনি পালিয়ে যায় তার পদত্যাগ করা বা না করায় কি আসে যায়। তিনি তো পলাতক।
তিনি বলেন, দেশের দ্রব্যমূল্যের যে অস্থিতিশীল অবস্থা এবং বর্তমান যে প্রবৃদ্ধি, আমি মনে করি এটা সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক তারা স্থায়ী বা অস্থায়ী এটা কোনো কথা না। তাদের দ্বায়িত্ব হলো জনগণের স্বস্তি নিশ্চিত করা। কাজেই আমরা অনুরোধ করব সরকারের কাছে যেন খুব দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে মানুষের জীবনে স্বস্তি আসে। জিনিসপত্রের দাম যেন স্থিতিশীল হয়।
আওয়ামী লীগ সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টা করছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আমি জানি এই সরকারের যতটা শক্তি থাকার কথা ততটা নেই। প্রশাসন এবং পুলিশ বিশেষ করে তা পূর্ণাঙ্গ শক্তি এই সরকার প্রয়োগ করতে পারছে না। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই বলে তাদের লোকেরা এই দেশে নেই, ব্যবস্যা-বাণিজ্যের মধ্যে নেই, সমস্যা সৃষ্টি করার সক্ষমতা নেই এই কথা বলা ভুল, আছে। নানাভাবে তারা সমস্যার সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কিন্তু অন্যায় দমনের দ্বায়িত্বতো ফাইনালি সরকারের উপরে। আমরা সহযোগিতা করতে পারি, কিন্তু আমরা সরকারের পক্ষ হয়ে অন্যায় দমন করতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, এই দেশটা আমাদের। মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা এই দেশটা স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু দেশটা দখল করে ফেলা হয়েছে। স্বার্থবোধ, ক্ষমতার লোভ এই দেশটাকে দখল করে ফেলেছে। আমাদের সহকর্মীরা আমাদের সন্তানরা এই দেশটা দখলমুক্ত করেছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে নেই। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। এইসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সরকারকেও সহযোগিতা করতে হবে। কারণ আমরা জানি এই সরকার খুব সবল না। সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। আমাদের সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জানিপপের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ প্রমুখ।
ওএফএ/জেডএস