উন্নয়নের নামে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতে ছিল আওয়ামী লীগ
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ বলেছেন, উন্নয়নের নামে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতে ছিল আওয়ামী লীগ। তারা বাংলাদেশ দেউলিয়ার পর্যায়ে নিয়ে গেছে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল দমন করা আওয়ামী লীগের রাজনীতির মূলনীতি।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ছিল, ক্ষমতায় গেলে কুরআন ও সুন্নাহ’র বিরুদ্ধে কোনো আইন তারা করবে না। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের সাড়ে ৩ বছরে দেশে সকল ইসলামী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেছে। ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি চলবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। ইসলাম ছাড়া কোনো জাতি প্রকৃত শান্তি পেতে পারে না এবং পায় না। শেখ হাসিনা তার পিতার পথেই হেঁটেছে। যার ফলে শেখ হাসিনাও জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে এবং সবশেষ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে। ফেরাউনের প্রেতাত্মা শেখ হাসিনা দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেছে, তার পরে দেশ চালাবে কে? তিনি শুধু নিজেকেই যোগ্য মনে করেন। আর কেউ যোগ্য নয়, কারো কোনো যোগ্যতা নাই বলে তিনি নিয়মিত উপহাস করতেন। কিন্তু ফেরাউনের প্রেতাত্মা শেখ হাসিনার সেই দাম্ভিকতার জবাব বাংলাদেশের মানুষ ৫ আগস্টের জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন
এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো জনস্বার্থে রাজনীতি করেনি। পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসাই ছিল তাদের রাজনৈতিক অপকৌশল। ২০০৮ সালে একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে শেখ হাসিনা গণভবন দখল করে রাখার জন্য, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার ধরে রাখার জন্য ভারত যা চেয়েছে তাই দিয়েছে। শেখ হাসিনা স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে, তিনি ভারতকে যা দিয়েছেন ভারত তা কখনো ভুলতে পারবে না। কারণ তিনি ভারতের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি দিয়েছেন। সেই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ খুনি শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠা করা ব্যাংক, বীমা আওয়ামী লীগ লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আর অল্প কিছু দিন ক্ষমতায় থাকতে পারলে, স্বাধীন বাংলাদেশকে দেউলিয়া ঘোষণা করিয়ে ছাড়তো। আর এই সুযোগে ভারত বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য করতো। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সেই অপচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সেনাপ্রধান বুঝতে পেরেছেন, তিনি যদি জনগণের বিরুদ্ধে যান তবে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাকেও জীবন দিতে হবে। তাই সেনাপ্রধান আত্মীয়ের পরিচয় ভুলে গিয়ে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে দেশের মানুষের কাছে সেনাপ্রধানসহ পুরো বাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
৫ আগস্টের বিপ্লবে আমাদের তৃতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা পাকিস্তান থেকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করি। কারণ ১৯৪৭ সালে যদি বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে ব্রিটিশরা পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাধীন ভূমি ঘোষণা না করতো তবে আজও বাংলাদেশ, কাশ্মীরের মত পরাধীন থাকতো।
এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে তাড়িয়ে আবার নতুন চাঁদাবাজ ক্ষমতায় আসুক এটা জনগণ চায় না।
এদেশের জনগণ চাঁদাবাজের হাত বদল হতে দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী এমন এক কর্মী বাহিনী গঠন করেছে, সেই কর্মী বাহিনী জনগণের জান-মালকে আমানত হিসেবে বিশ্বাস করে, আল্লাহকে ভয় করে। জনগণ চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সেই কর্মী বাহিনী আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে।
ধানমন্ডি দক্ষিণ থানা আমীর হাফেজ রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জোবায়দুর রহমান বাবু’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও জোন পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আল আমিন শেখ।
জেইউ/এমএসএ