জনগণের অধিকার নিয়ে সরকারের মাথাব্যথা নেই : এবি পার্টি
যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা বলে ভারতের স্বার্থ রক্ষাকারী একতরফা চুক্তিগুলোর কারণে জনমনে প্রতিনিয়ত ভারত বিরোধী ক্ষোভ বাড়বে এবং অন্যায্য কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের প্রতিক্রিয়ায় দেশের নাগরিকদের মধ্যকার শ্রেণি বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছে এবি পার্টি।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিজয়নগরে বিজয়-৭১ চত্বরে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত গণশুনানিতে এই অভিমত ব্যক্ত করেন সর্বস্তরের নাগরিক ও দলীয় নেতৃবৃন্দ।
এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হকের সভাপতিত্বে ট্রানজিটের নামে ভারতকে একতরফা করিডোর দেওয়া, বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্প্রবর্তন, বেনজীর-আজিজ-মতিউরের মতো হাজারো আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের লুটপাট এবং লাগাতার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ ডামি সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদী গণশুনানি আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ, পথচারী সাধারণ নাগরিক ও দলীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
গণশুনানি পরিচালনাকালে সূচনা বক্তব্যে দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমাদের দেশের ভেতর দিয়ে ট্রেনে করে ভারতের নাগরিকরা তাদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে চলাচল করতে চাইলে বাংলাদেশের জনগণও ভারতের মধ্যদিয়ে নেপাল, ভুটান ও চীনে সড়কপথে যাতায়াতের রাস্তা পাওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো ক্ষমতাসীন সরকার ভারতের কাছ থেকে আমাদের স্বার্থ আদায়ে মনোযোগী নয়। সীমান্তে বাংলাদেশি অসহায় নাগরিকদের নির্বিচার হত্যা বন্ধে ভারতের কাছ থেকে সরকার গত ১৫ বছরে কোনো প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পারেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়েও সরকার জোর গলায় ভারতের কাছ থেকে কোন দাবি আদায় করতে পারেনি।
তিনি বলেন, এই সরকার যেহেতু জনগণের সমর্থনে ক্ষমতায় আসেনি তাই জনগণের অধিকার নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নাই। সরকারের এই নতজানুতা দেশের মানুষকে আওয়ামীলীগ ও ভারতের বিরুদ্ধে আরও বেশী বিক্ষুব্ধ করে তুলছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
কোটা পদ্ধতিকে সংবিধান পরিপন্থি আখ্যায়িত করে তিনি আরও বলেন, এই কোটা সংস্কার করা না হলে নাগরিকদের মধ্যকার বিদ্যমান শ্রেণি বৈষম্য আরও প্রকট আকার ধারণ করবে যা কোন না কোন সময় গৃহযুদ্ধের পরিণতি ডেকে আনবে।
সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক বলেন, জনগণের প্রশ্ন হলো এই সরকারের সব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক কেন শুধু ভারতের স্বার্থে? ভারতের সঙ্গে যৌথ স্যাটেলাইট চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ কী? এতে আমাদের কী উপকার হবে? এই চুক্তি কি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি নয়? জনগণ এসব বিষয়ে জানতে চায়।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ডামি প্রধানমন্ত্রী ১৯৬ জন প্রতিনিধি নিয়ে বেইজিং গিয়ে যে টাকার ভিক্ষা নিয়ে আসছেন তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা বেনজীর, আজিজ, মতিউররা একেকজন লুট করেছে।
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম একটি গণপ্রজাতন্ত্রী দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু এখন তা একদল লুটেরাদের মাধ্যমে শেখ পরিবারের রাজতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। আমরা এই রাজতন্ত্র মেনে নেব না।
গণশুনানিতে আরও বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমাদ বারকাজ নাসির, সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, উত্তরের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক, মশিউর রহমান মিলু, আমেনা বেগম, রিপন মাহমুদ, যুবনেত্রী শাহিনুর আক্তার শীলা, মহানগর নেতা মুন্সি আব্দুল কাদের, সিএমএইচ আরিফ, রনি মোল্লা প্রমুখ।
জেইউ/এসকেডি