খালেদার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন।
সোমবার (৩ মে) সন্ধ্যার পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। ডা. জাহিদ বলেন, আজ ভোরের দিকে খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। পরে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করেন। আমরা তার রোগমুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাদের জানাতে চাই, যেকোনো পরিস্থিতিতে মানুষের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তার শরীরের বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আমরা পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, করোনারি কেয়ার ইউনিটে যখন রোগী থাকে, তখন তিনি স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেন। খালেদা জিয়ারও তাই। এর বেশি এখন বলা সম্ভব নয়। আপনাদেরকে বলি, আমি কয়েক মিনিট আগে ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করে এসেছি। তার সঙ্গে কথা বলে এসেছি। তাকে জিজ্ঞেস করেছি, কেমন আছেন।
সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।
সোমবার বিকেলে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নন-করোনা ইউনিট থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তখন ঢাকা পোস্টকে ডা. জাহিদ বলেন, ম্যাডামকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন। আপাতত আপনারা এটুকুই জানুন। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেদিন তার বাসভবন ফিরোজায় আরও ৮ জন ব্যক্তিগত স্টাফও করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তখন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘খুবই লো টাইপের সংক্রমণ ধরা পড়েছে তার (খালেদা জিয়ার)।’
এদিকে গত ৩০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার বাড়ির ৮ জন স্টাফের সবাই করোনা নেগেটিভ হন। তবে খালেদা নেগেটিভ হয়েছেন কি না সে বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা। তারা কিছুটা ঘুরিয়ে বলেন, ‘তার শরীরে এখন করোনার কোনো উপসর্গ নেই। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে নন-করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন।’
এরপর শনিবার (১ মে) চিকিৎসকরা জানান, শুক্র ও শনিবার মে দিবসের সরকারি ছুটির কারণে এই দুদিন ঠিকমতো খালেদা জিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায়নি। ফলে হাসপাতাল থেকে তার বাসায় ফিরতে কয়েকদিন সময় লাগবে।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে ছিলেন তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয়। দুই দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
এএইচআর/আরএইচ/জেএস