বয়কটের মধ্যেও কোকাকোলার পক্ষে জবি ছাত্রলীগ?
ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের ওপর ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে কোকাকোলার পণ্য বর্জনের আন্দোলন। এ বয়কটের মধ্যেই ঈদুল আজহার দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের আপ্যায়নের জন্য কোকাকোলাকে সঙ্গী করেছে শাখা ছাত্রলীগ। ইতোমধ্যে কোকাকোলার কোমলপানীয় কোক ও স্প্রাইটের ছবি দিয়ে শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জোর প্রচারণা শুরু করা হয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। এ অবস্থায় প্রশ্ন ওঠেছে, জবির ছাত্রলীগ নেতারা কি আসলেই ফিলিস্তিনের পক্ষে?
রোববার (১৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি আপলোড করেন। সেখানে দেখা যায়, ছাত্রলীগের জবি শাখার সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ও সেক্রেটারি আকতার হোসাইন চেয়ারে বসে আছেন। আর তাদের সামনেই কোকাকোলাসহ অন্যান্য খাবার স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
শাখা ছাত্রলীগ কর্মী আবুল বারেক সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড দিয়ে লিখেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে চলছে আপ্যায়নের প্রস্তুতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এমন যারা ঢাকায় আছেন, সকলেই আমন্ত্রিত।’
আরও পড়ুন
শাখা ছাত্রলীগের এ কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, কিছুদিন আগে তারা ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। আজকে আবার তারা আপ্যায়নের নামে ইসরায়েলি পণ্য কোকাকোলা ও স্প্রাইটের ব্র্যান্ডিং করছে। এটা তো সম্পূর্ণ দ্বিচারিতা। তাহলে কি আমরা এটা বলতে পারি না যে তাদের ফিলিস্তিনের পক্ষ নেওয়াটা ছিল লোক দেখানো?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে থাকা এক নেতা বলেন, যেখানে সরকার ফিলিস্তিনের পক্ষে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকেও ইসরায়েলের বিপক্ষে ও ফিলিস্তিনের পক্ষে কর্মসূচি করেছে। সেখানে ইসরায়েলি পণ্য কোকোকোলা কিনে তার সঙ্গে সভাপতি-সেক্রেটারি ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার অশোভনীয়। ঈদের দিন শিক্ষার্থীদের এগুলো বিতরণ করা হবে। ইসরায়েলি পণ্য কিনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করেছেন তারা।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসেন বলেন, আমরা দোকানিকে অন্য ব্র্যান্ডের কোমলপানীয় দিতে বলেছিলাম কিন্তু সে কোকাকোলা পাঠিয়ে দিয়েছে। এটা আবার পরিবর্তন করে নিয়ে আসব।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা চলছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, কোনো একটা কাজ করতে গেলে আলোচনা সমালোচনা হবেই। এটা নির্ভর করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির উপর।
এর আগে গত ৬ মে ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ওই মিছিলের নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি ও সেক্রেটারি এসএম আক্তার হোসেন। মিছিলে তারা স্বৈরাচার নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক’; ‘গণহত্যা বন্ধ করো, ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’; ‘ছাত্রলীগের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিয়েছিলেন।
এমএল/এসকেডি