দেশকে টেনে ধরতে রাষ্ট্রবিরোধীরা ষড়যন্ত্র করছে : নৌপ্রতিমন্ত্রী
এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে টেনে ধরার জন্য রাষ্ট্রবিরোধী চক্র আজ ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারের মধ্যে ঢুকে থেকে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য আজকে কতিপয় গোষ্ঠী মহাপরিকল্পনা করছে। সেজন্য তারা শেখ হাসিনাকে টার্গেট করেছে। শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দিতে পারলে বাংলাদেশ আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
রোববার (২ জুন) দুপুরে দিনাজপুরের ধর্মপুর ইউনিয়নের গদাবাড়ী গ্রামে কামবালা নিবাস হস্তান্তর ও কামবালা সড়কের উদ্বোধনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর রাজনৈতিক জীবনে বিরল অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনে একটি বিরল অভিজ্ঞতা গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে। আমি এতদিন রাজনীতি করেও যেটা শিক্ষা লাভ করিনি, আমাদের গদাবাড়ী গ্রামের ৯২ বয়সের এই বৃদ্ধা কামবালা আমাকে সেই শিক্ষা দিয়েছেন। একটি ভোট একটি এলাকার জন্য, একটি দেশের জন্য, সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা তিনি দেখিয়েছেন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে কালিয়াগঞ্জ স্কুল মাঠে জানুয়ারির ৩ তারিখ নির্বাচনী প্রচারণা অংশ নিয়েছিলাম। সেই পথ সভাটি জনসভা রূপ নিয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ করে আমার মা বোনেরা। সেই অনুষ্ঠানে এত মানুষের ভিড় ঠেলে কামবালা তিনি তার প্রার্থীকে চিনেন না, তিনি যে আদর্শকে সমর্থন করেন, যে দলের প্রতি তার ভরসা আছে, যে নেতৃত্বের প্রতি তার বিশ্বাস আছে, সেই নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের সভামঞ্চের দিকে এগিয়ে গেলেন। প্রার্থীকে খুঁজে নিয়েছেন।
তিনি সেই সময় তার যৎসামান্য সঞ্চয় তুলে দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের প্রতীক, স্বাধীনতার প্রতীক, আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার প্রতি কামবালা বেওয়ার অগাধ বিশ্বাস আছে। আমি যখন নৌকার তাকে (কামবালাকে) ব্যাচ পরিয়ে দিচ্ছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন-আমি এই প্রতীক চিনি, এই প্রতীক আমাকে চেনাতে হবে না। নৌকার মার্কার প্রতি তার অগাধ আস্থা, বিশ্বাস, তা দেখে একজন প্রার্থীও একজন ভোটারের কাছে পরাজিত হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, কামবালার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি, কামবালা হচ্ছেন ভোটার অব দ্যা ইলেকশন। তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, এটা শুধু ভোটের বিষয় না, শিক্ষণীয় বিষয়। একটি ভোট একটি জাতির ভাগ্য পরিব করে দিতে পারে। একটি ভোট একটি দেশকে উন্নয়নের শিখড়ে নিয়ে যেতে পারে, একটি ভোট একটি জনগোষ্ঠীকে সমগ্র পৃথিবীতে জাগ্রত করতে পারে।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, একটি ভোট মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে। ৯৬ সালে শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়েছিলাম। তিনি বাংলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছিলেন। কিন্তু ২০০১ সালে নির্বাচনে বাংলার মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষকে নির্যাতন, নিপীড়ন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, হাওয়া ভবন করে দেশের মানুষকে সর্বস্বান্ত করেছে। তখন দেশের মানুষের কোনো স্বাধীনতা ছিল না, বাক স্বাধীনতার ছিল না, জীবনের নিরাপত্তা ছিল না, সংসদ সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। আজকের প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলা করে হত্যা করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদের জনপদ হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে চেয়েছিল। সেই সন্ত্রাসবাদকে চ্যালেঞ্জ করে ভোটের মাধ্যমে কোথায় নিয়ে গেছে। আজ শুধু গদাবাড়ীর কামবালা নয়, সারা বাংলাদেশের কোনো জায়গা ভূমিহীন থাকবে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি ধীরে ধীরে বাংলাদেশে ভূমিহীন শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা নৌকা মার্কা ভোট দিয়েছিলেন বলে আমরা দারিদ্র্যতা জয় করেছি। বাংলাদেশ একটি স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আপনার একটি ভোটের কারণে ২০২৬ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে তার গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করবে।
উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ করে বলেন, কোনো ধরনের মিথ্যা প্রচারণার গুজবে কান দিবেন না।
এসময় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সবুজার সিদ্দিক সাগর ও সাধারণ সম্পাদক বাবু রমাকান্ত রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএসআই/এমএ