যাদের ঘড়ির দাম ৫০ লাখ, তারা রিকশাচালকদের মর্ম কীভাবে বুঝবে
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দিলেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। তিনি নিজেই বলেছেন তার হাতের ঘড়ির দাম অনেক টাকা, অনেক মানুষ বলে ৫০ লাখ টাকা। তিনি যে সানগ্লাস পরেন সেটিরও দাম লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যার সানগ্লাসের দাম এত, ঘড়ির দাম ৫০ লাখ টাকার ওপরে, তিনি ব্যাটারিচালিত রিকশাওয়ালাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। তিনি কীভাবে তাদের মর্ম বুঝবেন?
সোমবার (২০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চা শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, তাদের সন্তানরা তো বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। কেউ বলে দুবাইয়ে, কেউ বলে কানাডায়, কেউ বলে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম। বিভিন্ন ধরনের বাড়ি তারা সেখানে নির্মাণ করেছে। তারা তো এদের (অটোরিকশাচালক) বিষয়ে জানে না। তারা একবেলা চাল কিনতে পারছে না।
তিনি বলেন, যে দেশে আলুর দাম এই সিজনেও ৫০ টাকা, এটা কী ওবায়দুল কাদের সাহেব জানেন? কারণ ওনাদের প্রত্যেকটি নেতা এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন বিদ্যুৎ খাত থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছেন, বিভিন্ন উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। শুধু টাকা পাচারের এই আরব্য উপন্যাসের কাহিনি প্রতিদিন আমরা সংবাদপত্রের পাতায় পড়ছি। সুতরাং তারা কী করে ওই ব্যাটারিচালিত রিকশাওয়ালাদের করুন কাহিনি জানবে। কী করে জানবেন ওবায়দুল কাদের সাহেবরা।
তিনি আরও বলেন, এই ব্যাটারিচালিত রিকশা নিশ্চয়ই কোনও দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই আমদানি করার লাইসেন্স কে দিল? আপনার সরকারই দিয়েছে, এগুলো যারা ইমপোর্ট করেছে তারা তো আওয়ামী লীগের লোক। তারা তো আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। আর যারা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে তাদেরই দোষ হয়ে গেল?
এই বিএনপি নেতা বলেন, আপনাদের পেট ভরে বদ হজম হবে, তারপরও আপনাদের টাকা দরকার। তারপরও এরা কিন্তু এমনি এমনি চালাতে পারে না। আপনার প্রশাসনের লোকদের টাকা দিতে হয়, স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হয়। এত ঘাটে ঘাটে টাকা দেওয়ার পরও যতটুকু তাদের উপার্জন হয়, সেটি দিয়ে কোনোরকমে তারা দিন যাপন করে। আর এদের ওপরেই আপনারা চালাচ্ছেন স্টিম রোলার। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি গরিবের আহার কেড়ে নিয়ে, ভাত কেড়ে নিয়ে রাজত্ব করবেন, আপনারা স্বর্গে বসবাস করবেন... ওই স্বর্গ থেকে আপনাদের বিদায় নিতেই হবে। ওই স্বর্গে আপনারা আর বেশি দিন বসবাস করতে পারবেন না।
শেয়ার বাজারেও নতুন করে ধস নেমেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, তরুণ শিক্ষিত যুবকরা ও অল্প আয়ের মানুষেরা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে। সেই শেয়ার মার্কেটেও আবার নতুন করে এমন পতন হচ্ছে, ওই পতন থেকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না শেয়ার মার্কেট। এতে বেকার হচ্ছে তরুণরা ও যুবকরা। তারা এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে, ফতুর হয়ে গেছে।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ওএফএ/কেএ