গ্রেপ্তারের আগে নারীসহ আটক হয়েছিলেন মামুনুল, কী হয়েছিল সেদিন?
প্রায় তিন বছর আগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক রিসোর্টের রুমে নারীসহ আটক হয়েছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। এরপর তাকে সেখান থেকে ছিনিয়ে নেয় তার অনুসারীরা। সেদিন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে, গাড়ি ভাঙচুর করে সড়ক অবরোধ করেন। বেশকিছু সময়ের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে এসব ঘটনাসহ আরও কিছু মামলায় মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তিন বছরেরও অধিক সময় কারাবাসের পর শুক্রবার (৩ মে) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন মামুনুল হক। এরপর ফের আলোচনায় উঠে আসে সাবেক এ হেফাজত নেতার নাম।
এদিকে মামুনুলের মুক্তির খবরে গতকাল রাত থেকেই কারাগারের সামনে ভিড় জমান হেফাজত নেতাকর্মীসহ তার অনুসারীরা। এরপর আজ সকালে তার মুক্তির পর নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। খবর পেয়ে হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে রয়্যাল রিসোর্টের ব্যবস্থাপক লাল মিয়া জানিয়েছিলেন, দুপুরের দিকে মামুনুল হক তাদের রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে ওঠেন। এরপর সেখানে অনেক লোকজন জড়ো হয়। ঘটনাস্থলে ইউএনও, পুলিশসহ অনেকে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মামুনুল হক রিসোর্টের ওই রুমেই আটকা ছিলেন। এ খবর পেয়ে হেফাজতে ইসলামের লোকজনও লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে ভিড় জমায়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সেখানে ভাঙচুর চালায়।
এ ঘটনার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করেন মামুনুল হক।
১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল ওই মাদরাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন তার সঙ্গে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া নারী। যদিও ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক। এরপর ওই মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ অর্ধশতাধিক মামলা হয়। পরে সেসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে এসব মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন। অর্থাৎ ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারেই ছিলেন মামুনুল হক।
এমএসআই/এমজে