বিএনপির যেসব নেতার ঈদ কাটবে কারাগারে
গত বছরের ২৮ অক্টোবরের আগে-পরে বিভিন্ন ‘নাশকতা ও ভাঙচুরের’ মামলায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূলে অনেক কর্মীও জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। তবে এখনও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় এক ডজন নেতা কারাগারে রয়েছেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী এখনও কারাগারে রয়েছেন। এবারের ঈদে এসব নেতাকর্মীদের পাশে পাবে না পরিবার।
শায়রুল কবির জানান, এ মুহূর্তে কারাগারে আছেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসন উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আসলাম চৌধুরী, হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, নির্বাহী সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর, নির্বাহী সদস্য ও যুবদল সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল হৃদয়, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ খোকন, উত্তরা থানার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ার, সাবেক কমিশনার হারুন অর রশীদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী জিয়াউদ্দিন বাসিত প্রমুখ।
বিএনপির কোন নেতা কোথায় ঈদ করবেন
বিএনপির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২০ সালের পর থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ঈদ করে আসছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মাঝে ২০২৩ সালের ২টি ঈদ কেটেছে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে। এবার তিনি ঈদ করবেন গুলশানের বাসভবনে। ঈদের দিন তার সঙ্গে দেখা করতে আসবে পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির নেতারও ঈদের দিন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসবেন।
আরও পড়ুন
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে চারটি ঈদ কেটেছে খালেদা জিয়ার।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ঢাকায় ঈদ করবেন। ঈদের আগে তিনি নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে যাবেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিগত কয়েক মাস ধরে অসুস্থ। এ কারণে রাজনীতি থেকে তিনি বিরত আছেন। তিনিও ঢাকায় ঈদ করবেন।
বাকি স্থায়ী কমিটির সদস্যের মধ্যে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান ঢাকায় ঈদ করবেন। আর স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান নরসিংদীতে ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামের নিজ এলাকায় ঈদ করবেন।
এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং সালাউদ্দিন আহমেদ বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা সেখানে ঈদ করবেন বলেও জানানো হয়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকায় থাকবেন। ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু নোয়াখালীতে।
এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ঢাকায় থাকবেন। আর ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু নোয়াখালীতে ঈদ উদযাপন করবেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নাটোরে, আব্দুস সালাম আজাদ মুন্সীগঞ্জ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ময়মনসিংহ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী লক্ষ্মীপুর, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল ঢাকায় ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম সিরাজগঞ্জের নিজ এলাকায় ঈদ করবেন।
ঈদের দিনে বিএনপির কর্মসূচি
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১১টায় শেরেবাংলা নগর দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে যাবেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এছাড়া রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবেন তারা।
শায়রুল কবির খান জানান, ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১১টায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতারা।
তিনি আরও জানান, ঈদের দিন রাত ৮টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের।
এএইচআর/এসকেডি