বান্দরবানের ঘটনা প্রমাণ করে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর
পার্বত্য চট্টগ্রামে বান্দরবানের ঘটনায় দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর তা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (৭ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) এর উদ্যোগে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি এবং আন্দোলনে নিহত নেতাকর্মীদের পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ সীমান্ত ভয়াবহরকমের আক্রান্ত, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। গত দুই-তিন দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাংক লুট হয়েছে, থানায় আক্রমণ হয়েছে। কী দুর্ভাগ্য আমাদের এখন পর্যন্ত আমাদের সরকার বলতে পারছে না, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, যখন কোনো কিছু করতে পারে না, বের করতে পারে না তখন দোষ চাপাতে হয় জঙ্গি খুঁজে বের করে। এই ঘটনা প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর।
‘সরকার ভারতের সাথে পানি সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারেনি, মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারেনি’ উল্লেখ করে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী বলেন, এরা (সরকার) সব দিক দিয়ে ব্যর্থ। এরা রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে, এরা জনগণকে পথ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে তারা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাসের কবলে, উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনি চিন্তা করে দেখুন আজকে এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। একটা মাত্র বাকি আছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সেটা ওপরেও তারা হিংস্রতা ধারণ করেছে।
আরও পড়ুন
‘আমরা ছাত্র রাজনীতির বিরোধী নই বলে উল্লেখ করে বিএনপির সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমরা ছাত্র রাজনীতি করে এসেছি…। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগে ভাষা আন্দোলনে সব কিছুতে ছাত্ররা করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভয়াবহ সন্ত্রাসের রাজত্ব তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি করেছে।
তরুণ-যু্ব সমাজকে জেগে উঠার আহ্বানও জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তরুণ সমাজকে বলব, আর কতকাল তোমরা এভাবে নির্যাতিত হবে। আর আমাদের এই দৃশ্য দেখতে হবে। মা তার ছেলের জন্য কাঁদছে, ছোট্ট শিশু তার বাবাকে দেখতে চায়, পেতে চায় কাছে। আমাদের তো বয়স শেষদিকে...এখন তো আমাদের রাস্তায় নেমে কাজ করা সম্ভব নয়। এখন যুবকদের, তরুণদের প্রতিজ্ঞা নিয়ে সামনে আসতে হবে।
বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছি, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছি। আমরা সবাই দুঃখ-কষ্টের মধ্যে আছি কিন্তু এই দুঃখ-কষ্টকে আমাদের শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। মানুষের জন্য আমরা সংগ্রাম করব, আন্দোলন করব, বিজয়কে ছিনিয়ে আনব ইনশাল্লাহ।
এ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আনহ আখতার হোসেন এবং এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী হাছিন আহমেদ, এ্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা জামাল সেলিম, আসাদুজ্জামান চুন্নু, নূরে আলম ভুঁইয়া, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল মতিন খান, মো. হানিফ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শাম্মী আখতারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এএইচআর/পিএইচ