‘কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া কেউ কমিটি দিতে বা ভাঙতে পারবে না’
কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া কেউ কোনো থানা বা উপজেলা কমিটি গড়তে পারবে না, ভাঙতেও পারবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রংপুর বিভাগের আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙে মতবিনিময় সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কারো নিজের ইচ্ছায় কোনো কমিটি গঠন করতে পারবেন না। আপনারা কোনো থানা/উপজেলা কমিটি গড়তেও পারবেন না, ভাঙতেও পারবেন। আপনাদের কোনো কথা থাকলে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করবেন—এই কারণে ওই কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আপনারা ভাঙবেন কেন? অনেক সময় দেখা যায় উপজেলা/থানা কমিটি ভেঙে দিয়েছে কিন্তু কেন্দ্র জানে না। আওয়ামী লীগে এটা হতে পারে না।
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন, নিজের পকেট থেকে কমিটি করবেন, পকেটের কমিটি আমরা চাই না। কমিটি করবেন দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের দিয়ে। আজকে দুই পকেটে দুজন নেতা নির্বাচন, এই ধরনের নেতৃত্ব দলের কোনো কাজে আসবে না। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠন করতে হবে।
নিজের দলের ভেতরের শত্রু তাড়াতে হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, আপন ঘরে যার শত্রু তার শত্রুতার জন্য বাইরের শত্রুর দরকার নাই। আপন ঘরের শত্রু তাড়াতে হবে। আপন ঘরে শত্রু রেখে কোনো দিনও স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য সফল হবে না।
তিনি বলেন, আমাদের পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে নিজেরা সমাধান করবেন। না পারলে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি আছে, তারাও না পারলে আমাদের নেত্রী আছেন। ঘরের সমস্যা আমরা ঘরেই সমাধান করবো। ঘরের মধ্যে একে অপরের সঙ্গে শত্রুতা, জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় এমনটাই হয়েছে। এর পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপি কি বলল এটা বিচার করে বাংলাদেশে রাজনীতি চলবে না বলে মন্তব্য করে কাদের বলেন, বাস্তব অবস্থার সঙ্গে তাদের চিন্তাভাবনা মিল নেই। এখানে নির্বাচনে ঘাটতি কোথায়? টার্ন আউট সন্তোষজনক। নির্বাচন নিয়ে যারা এক সময় কথা বলতো, নিষেধাজ্ঞার প্রশ্ন ছিল তারাও বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি শক্তি কমে গেছে তাই মুখের বিষ উগ্র হয়েছে। বিএনপি কথা শুনলে এখন এটাই মনে হয়। এত নোংরা কাজ একটা রাজনৈতিক দল করতে পারে তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। এই দেশের গণতন্ত্র হত্যাকারী বিএনপি, গণতন্ত্রের জন্য মায়া কান্না করছে। যে যাই বলুক, আমরা সঠিক পথে আছি। আর্থিক বিভিন্ন সূচকে আমাদের অবস্থা আমরা জানি। অর্থমন্ত্রীর কণ্ঠেও আশাবাদের সুর। আমাদের এখন আশঙ্কা করার কোনো কারণ নেই। আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।
নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের খেলা হয়েছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এমন খেলা একাত্তরেও চলেছিল। সে অশুভ খেলায় একাত্তরে যেমন ভারতসহ কিছু বন্ধু দেশ পাশে ছিল, তেমনি এখনো আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এটা হলো ভারতের অপরাধ। সে জন্য ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে হবে। বর্জন করতে যারা বলে তাদের রান্না ঘরে ভারত, ড্রেসিংরুমে ভারত, তাদের শোবার ঘরে ভারত, এটা হলো বাস্তবতা। বঙ্গবন্ধু আমলে ভারত বিরোধিতার যে অশুভ খেলা হয়েছে একই অশুভ খেলা আবার শুরু হয়েছে। সব কিছু ছাড়িয়ে বিএনপি এখন ভারত বিরোধিতায় নেমেছে।
আমরা চ্যালেঞ্জিং টাইম অতিক্রম করছি জানিয়ে তিনি বলেন, এই সময় ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা অনেকেই বলে ফেলে, পত্র পত্রিকায় বের হয়। দায়িত্বশীল ব্যক্তি দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলতে পারে না। এটা সবাই মনে রাখবেন।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আবুল হাছান মাহমুদ আলী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
এমএসআই/এমএসএ