‘দেশবাসী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাবে’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে জনগণ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করতে না পারলে দেশে আরেকটি চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ অনিবার্য হয়ে উঠবে। দেশবাসী জীবন পণ করে রাজপথে নেমে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অবৈধ ভোট ডাকাত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবে।
রোববার (১৮ ফ্রেরুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১২ দলীয় জোটের আয়োজনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের সব কারাবন্দিদের মুক্তি, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন জোটের নেতারা।
জোট নেতারা বলেন, ভারতের দাসত্ব করে আওয়ামী লীগ দেশটাকে ভারতের করদ রাজ্য বানিয়ে ফেলতে চায় এবং বিরোধী দলের বিরুদ্ধে স্টিমরোলার চালিয়ে দুঃশাসনের জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছে। জনগণ এই দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়।
বক্তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ভারতের ভূমিকা স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের শামিল। ভারতের দাসত্ব করে আওয়ামী লীগ দেশটাকে ভারতের করদ রাজ্য বানিয়ে এবং বিরোধী দলের বিরুদ্ধে স্টিমরোলার চালিয়ে দুঃশাসনের জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছে। জনগণ এই দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। জনগণ রক্ত দিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছে ভারতের গোলামি করার জন্য নয়। জনগণ ভারতের সীমাহীন হস্তক্ষেপ ও বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগিতা এবং ভারতীয় পণ্য বর্জনের মত কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর কুফল ভারত পেতে শুরু করেছে, অচিরেই এর ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া ভারতের জনগণ উপলব্ধি করবে।
বক্তারা বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী, আমরা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তাই ভারতের উচিত আওয়ামী লীগ সরকার নয়, শেখ হাসিনা নয়, বাংলাদেশের জনগণের অধিকারের পক্ষে ভূমিকা রাখা। দেশের মালিক হাসিনা নয়, আওয়ামী লীগ নয়, ১৮ কোটি জনগণ দেশের মালিক। জনগণের বিরুদ্ধে একটি দলের পক্ষ নেওয়ার পরিণতিতে ভারতকে তার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হারাতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ ভারতের পণ্য বর্জন করলে তার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব মোকাবিলা করতে হবে ভারতের জনগণকেই।
আরও পড়ুন
জোটের নেতারা এসময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দেন।
১২ দলের মুখপাত্র এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারে নাই। কে দেশ পরিচালনা করবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে নাই। খালেদা জিয়া জেলখানায়, গণতন্ত্র হরণ, প্রত্যেকটার মূলে ভারতীয় আগ্রাসন। এই ভারতের পা চাটা তাঁবেদার সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে আইন করে এ দেশকে ভারতীয় একটি অঙ্গরাজ্য বানাবে। দেশের গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। ভারতের পণ্য বয়কট করা, ভারতকে না বলার এখন সুযোগ এসেছে।
১২ দলীয় জোটের প্রধান জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ১২ দলের মুখপাত্র এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্য জোটের সিনিয়র সহ-সভাপতি শওকত আমিনসহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
ওএফএ/পিএইচ