জনগণের নৈতিক শক্তি ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার : জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের জনগণের নৈতিক শক্তি ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের ৯০ ভাগের বেশি মানুষ ভোট বর্জন করে জাতীয় নৈতিক শক্তির একটা ক্ষমতা দেখিয়েছে। এ সরকার বাংলাদেশকে একটা দলীয় পারিবারিক সম্পত্তিতে পরিণত করে জমিদারি করতে চায়। সরকার নৈতিক দিক থেকে দেশকে ধ্বংস করে দিতে চায়।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণসংহতি আন্দোলন কর্তৃক আয়োজিত “৬৯'র গণঅভ্যুত্থানের ৫৪ তম বার্ষিকী” উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ক্ষমতায় বসে আছেন শেখ হাসিনা আর দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেলে উনি বিরোধী দলের উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন। নিজেরা লুটপাট করে সিন্ডিকেটের সরকার হয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে, এটা হচ্ছে স্বৈরশাসনের বৈশিষ্ট্য। এ রকম চিত্র ৬০ এর দশকে দেখা গেছে। এখন যেভাবে দেখা যাচ্ছে হয়ত ৬০ এর দশক বর্তমান সময়ের কাছে লজ্জা পায়। আইয়ুব খান ক্ষমতায় আসার পরে যে রকমভাবে ভয় এবং ত্রাসের শাসন করেছে ঠিক তেমনিভাবে এ সরকার একই কাজ করছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকারের কোনো সংকট যায়নি। মানুষ এখন সরকারের পরিবর্তন চায়। গত ২ থেকে ৩ বছর ধরে জনগণ পরিবর্তন চায়। সরকারের এখন লেজে-গোবরে অবস্থা হয়ে গেছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে মানুষ বর্জন করে তাদের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছে। আমাদের জেলের ভয় পেলে চলবে না। আমাদের রক্ত, ত্যাগ এবং বুদ্ধি দিয়ে বিজয় অর্জন করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এটি মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে রাজনীতিতে রূপ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন রাজনৈতিক দল। কিন্তু বর্তমানে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে রয়েছে। তারা সিন্ডিকেট করে দেশকে তাদের দখলে নিয়ে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া করেছে। সরকার এখন এত মিথ্যা কথা বলছে যে, সরকারের এখন আয়ু কমে যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর প্রতি মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন রয়েছে।
গণফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে রেখেছে মোদি সরকার। গতকাল বর্ডারে আমার দেশের একজন বিজিবি সদস্যকে ভারতীয় সেনারা মেরে ফেলেছে কিন্তু শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কিছুই বলেননি।
তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগ এখন সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করছে। নির্বাচনের খেলায় শেখ হাসিনা হেরে গেছেন। এ সরকার ভুয়া ভোটের ভুয়া প্রধানমন্ত্রী। সরকারের কাছ থেকে কোনো কিছু আশা করা যায় না। এ সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাবে।
১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি আর ২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারি এক কথা নয়। আমাদের লড়াই শুধু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধের লড়াই নয়, দেশকে যারা ধ্বংস করছে তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের লড়াই করতে হবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ লড়াই, রুটিরুজির লড়াই, সার্বভৌমত্বের লড়াই এক এবং অভিন্ন হয়ে গেছে, এটাকে সমন্বিত করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের (১১ দল) সমন্বয়ক এবং এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, রাজনীতিবিদ ফয়জুল হাকিম লালা, বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় গণফ্রন্টের আহ্বায়ক কমরেড টিপু প্রমুখ।
ওএফএ/এসকেডি