এক ব্যক্তির ইচ্ছায় নির্বাচন হচ্ছে : মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি এক ব্যক্তির ইচ্ছায় নির্বাচন হচ্ছে। ১২ কোটি ভোটারের ফলাফলও এক ব্যক্তির ইচ্ছায় নির্ধারিত হয়ে গেছে। সংবিধান লঙ্ঘন করে ভোটারদের নানাভাবে ভয়-ভীতি ও চাপ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, সুবিধাভোগী ভাতা কার্ড ও ভোটার আইডি কার্ড বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নজিরবিহীনভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের পোস্টাল ভোটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে গুলশানে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় এটিকে প্রহসনের নির্বাচন দাবি করে ভোট বর্জনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
এছাড়া, এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
মঈন খান বলেন, একদলীয় এই সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে। তাদের অন্যায় হুমকি পরোয়া করার আর কোনো কারণ নেই। চলমান আন্দোলনে জনগণের সমর্থন ও অংশগ্রহণে একদলীয় শাসন থেকে দেশের মানুষ শিগগিরই মুক্তি পাবে।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ভাতার কার্ড জব্দ করে কিংবা ভাতা বন্ধ করে দিয়ে কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করলে ভবিষ্যতে তাদের আইনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
বিএনপির অবস্থান
মঈন খান বলেন, বিএনপির একটি উদারনৈতিক শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দল। বিএনপিকে নিয়ে অনেক গল্প সরকার সাজিয়েছে, অনেক মিথ্যা ঘটনা তারা সৃষ্টি করে তার দায়-দায়িত্ব বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছে।
দলটির সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সরকার ভাবছে ৭ জানুয়ারি তাদের জয়লাভের দিন। আমি বলব, ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের পরাজয়ের দিন। কারণ সেদিন তারা বাংলাদেশের নতুন করে অপমৃত্যু ঘটাবে।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের আন্দোলনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য সরকার নিজেই বেশ কিছু ঘটনা ঘটিয়ে তার দায় আমাদের ওপর চাপানো চেষ্টা করেছে। এখনও সেই অপচেষ্টা চলছে। কয়েক দিন আগে দেখেছেন, কেউ কিছু জানে না কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হলো যে, হাসপাতালগুলোতে একটা নির্দিষ্ট দিনে রেডি রাখার জন্য যেন তারা চিকিৎসা করতে পারে। ঠিক ওইদিন একেবারে ঢাকা মহানগরীর ভেতরে বেশকিছু গাড়িতে আগুন ধরে গেলো এবং বেশ কিছু লোক সেখানে মারা গেলো।
তিনি বলেন, কোনো তদন্ত ছাড়াই সেদিন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হলো, এটা করেছে- যারা অবরোধ করেছে তারা। এটা এখন থেকে নয়, বহু বছর ধরে সরকার এই অপকৌশল চালিয়ে আসছে। তারা বিরোধী দলের আন্দোলনটানে বিপথগামী করার জন্য অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছে।
সাবেক এই শ্রমিক নেতা বলেন, জনগণের কাছে এই নির্বাচন একটা প্রহসন, এটা অর্থহীন নির্বাচন, যেটাতে দয়া করে কেউ জড়িত হবেন না। কারণ এটা একটা অপরাধমূলক অপতৎপরতা, এটাতে জড়িত হওয়াও অপরাধ। আমরা শুধু শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছি। আর কোনো আহ্বান আমাদের নেই। আর কোনো কাজ করলে ওইটা দায় আমাদের ওপর নেই। এই বর্জন করার আইনগত অধিকার আমার কাছে। এই বর্জন যারা করবে তারা আমাদের আহ্বান শুনবে। এর বাইরে অন্য যা করবে সেটা তাদের (সরকার) হুকুমে করবে, আমাদের হুকুমে না।
এএইচআর/কেএ/এমএসএ