‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেআইনি নিষেধাজ্ঞা জনগণ মেনে নেবে না’
নির্বাচন কমিশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি জনগণের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে চায় কোনোভাবেই জনগণ সেটাকে মানতে বাধ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ ও বিরোধী দলগুলো নির্বাচনকে একটা তামাশার নির্বাচন বলে মনে করে। যে নির্বাচনকে একটা একতরফা একটা দখলদারিত্বের ভাগ-বাঁটোয়ারার নির্বাচন মনে করে। এ নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর অধিকার দেশের প্রত্যেকটা নাগরিকের আছে।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে’ অনুষ্ঠিত সমাবেশ ও বিক্ষোভে এসব কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, বিরোধী দলসহ প্রত্যেকটা দলের সাংবিধানিকভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার আছে। নির্বাচন কমিশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি এই জনগণের এই সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে চায় কোনোভাবেই সেটাকে জনগণ মানতে বাধ্য নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলতে চাই, আপনারা যে অসাংবিধানিক বেআইনি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন এটা বাংলাদেশের মানুষ এটা মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সিলেটে গিয়ে তার কর্মীদের কাছ থেকে শুনেছেন ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে চাচ্ছে না। তখন তিনি বলেছেন দরকার হলে ভোটারদেরকে হাতে পায়ে ধরে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। যে দেশের মানুষ ভোটকে উৎসব মনে করে সেই দেশে আজকে তারা (আওয়ামী লীগ) মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। জনগণকে এখন তারা আবার হাতে পায়ে ধরে ভোট কেন্দ্রে আনতে চেষ্টা করছে।
সাইফুল হক বলেন, আমি আশঙ্কা করছি এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষকে গ্রেপ্তার করে হয়ত ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে পারে। ইতোমধ্যে মানুষ এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং তাদের শাসন। ১৪ সালে মানুষের ভোটের অধিকার,গণতন্ত্র এবং নাগরিকের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে সরকার স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী, জমিদারি শাসন কায়েম করেছে। এরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রু। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার চেতনার সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে এখন হাজির হয়েছে। এবার সরকার দল ভাগিয়ে নানা রকম উচ্ছিষ্ট ভোগীদের নিয়ে নির্বাচনে এসে এটাকে নির্বাচন দেখাতে চেয়েছে। মন্ত্রীরা ঘোষণা করেছেন বিএনপি থেকে নাকি শতশত লোকদের তারা ভাগিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন। কিন্তু তারা কাউকে ভাগিয়ে আনতে পারেননি।
সাকি আরও বলেন, ব্যারিস্টার শাহজান ওমর আওয়ামী লীগের সমস্ত গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগকে নগ্ন করে মাঠে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি (শাহজান ওমর) বলেন, তার নাকি এত ক্ষমতা এক ঘণ্টায় তিনি নৌকা নিয়ে আসতে পারেন।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশে এই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে সরকার একটা ডামি নির্বাচন করতে যাচ্ছে। আগামী ৭ তারিখে সরকার একটা ডামি নির্বাচন করতে যাচ্ছে। জনগণকে সাথে নিয়ে এটা প্রতিহত করতে হবে। নির্বাচনের আগে পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাব।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, কাজী হাবিবুল আওয়াল এই দেশের নব্য রাজাকার। আমরা তার বিচার এই দেশেই করব।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)-র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম জাবির, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান,গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন এবং নাগরিক ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক মুহিদুজ্জামান মুহিদ।
এমএইচএন/এসকেডি