সংসদ নির্বাচনে করণীয় নির্ধারণে ইসলামী আন্দোলনের সংলাপ শুরু
দেশের রাজনীতিতে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় সংলাপ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এই সংলাপ শুরু হয়। সংলাপে রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
জাতীয় সংলাপে সভাপতিত্ব করছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।
সংলাপের শুরুতে দলের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতির এই ক্রান্তিকালে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য সমাধান অনুসন্ধানে আয়োজিত আজকের এই মতবিনিময় সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের পথচলায় আমরা নানা চড়াই-উৎড়াই দেখেছি। বহু সমস্যার মোকাবিলাও করেছি। কিন্তু এখনকার সমস্যা অতীতের যেকোনো সমস্যার চেয়ে জটিল ও বহুমাত্রিক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আক্ষরিক অর্থেই গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে সীমানার বাইরে সিদ্ধান্ত হচ্ছে। ভূরাজনীতির জটিলতায় দেশ পরাশক্তির বিশেষ টার্গেটে পরিণত হয়েছে। অর্থনীতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে হত্যা করা হয়েছে, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার জায়গা নষ্ট করে রাষ্ট্রকেই অকার্যকর করা হয়েছে। চিন্তা, বুদ্ধি ও কথা বলার স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি আমাদেরকে চরমভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। এ অবস্থায় জাতির মুক্তির জন্য, মানবাধিকার এবং ভোটাধিকার রক্ষায়, রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায়, ৭১ এর অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায়, দেশের অর্থনীতি রক্ষায়, মানুষের জানমাল রক্ষায় ও দেশকে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে কী করণীয় তা নির্ধারণে সম্মিলিত পথ-পন্থা খুঁজে বের করতেই আজকের এই আয়োজন। সবার ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে মুক্তির পথ উন্মোচন করা যায় কি না সেই চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, দেশের অবস্থা নিয়ে আমি কোনো চর্বিত চর্বন করতে চাই না। আমরা আপনাদের সামনে সমস্যাগুলোর সারাংশ একত্রে উপস্থাপন করে রাখছি যেন আলোচনাকে ফলপ্রসূ ও কেন্দ্রীভূত রাখা যায়।
রাষ্ট্র ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি- সরকার হয় দলীয় এবং পরিবর্তনশীল। আর রাষ্ট্র হয় সবার এবং তা অপরিবর্তনশীল। সরকার আসে-যায় কিন্তু রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যায়। রাষ্ট্র একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন শক্তিকেন্দ্র নিয়ে গড়ে ওঠে। সরকার সেসব প্রতিষ্ঠান ও শক্তিকেন্দ্র ব্যবহার করে কাজ করে। দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও শক্তিকেন্দ্রগুলোকে নানাভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। পুলিশ-র্যাব-আনসার, আধা সামরিক বাহিনী, বিজিবি, সামরিক বাহিনী, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কত নির্মমভাবে ধ্বংস করা হয়েছে!
সংলাপে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।
জেইউ/এমজে