বাসে আগুন লাগিয়ে নেতাকে ছবি পাঠান যুবদলের নেতারা
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় মৌমিতা পরিবহনের বাসে আগুনের ঘটনায় যুবদলের ৪ নেতাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ। রোববার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে বাসে আগুন দেওয়া হলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সেক্রেটারি মো. দুলু (৪৪), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য মো. জয়নাল আবেদীন (৩৮), মো. আব্বাস আলী (৩২) এবং মো. আব্দুল লতিফ বিপ্লব (৩৩)।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, রোববার সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। আগুন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় যুবদলের চার নেতাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে ডিবি। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে তারা আগুন লাগায়। এরপর ৭টা ৪০ মিনিটে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই যুবদলের নেতা এটা তারা স্বীকার করেছেন। তাদের পদ পদবিও আছে। আবার তারা যে আগুনটা লাগিয়েছে, তারা তাদের নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন এবং অন্যান্য নেতাদের ছবি পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন
ডিবি প্রধান বলেন, কর্মীদের প্রতি বিএনপি নেতাদের নির্দেশ হলো, বাসে আগুন লাগাতে হবে এবং সেটা তাদের বড় ভাইদের পাঠাতে হবে। সেই নেতারা আবার তাদের বড় ভাইদের কাছে পাঠায়। যাদের গতকাল গ্রেপ্তার হয়েছে তারা আরও কোথায় কোথায় আগুন লাগিয়েছে তা আমরা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তাদের সাথে আরও কে কে জড়িত তা জেনে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এতো কিছুর পরেও কেন বাসে আগুন দেওয়া আটকানো যাচ্ছে না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের বিচ্ছিন্ন একটি জায়গায় ককটেল নিক্ষেপ করা বা একটা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া বিষয়টা জনমনে তেমন প্রভাব পড়ে না। সাময়িকভাবে হয়ত একটা প্রভাব পড়ে। এ কারণেই দেখা যাচ্ছে অবরোধেও ঢাকা শহরে যানজট। অবরোধ যে আছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে না। বিচ্ছিন্নভাবে এসব ককটেল বিস্ফোরণ এবং বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপিকে বিস্ফোরক দ্রব্য কারা দিচ্ছে এ বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে যুবদলের নেতা আবু সাইদ মিন্টুকে গ্রেপ্তার করার পর আমাদের কাছে এবং আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে যে যুবদলের নেতারাই এসব ককটেলগুলো বানাচ্ছে। কুমিল্লা থেকে এবং সীতাকুণ্ড থেকে তারা এসব ককটেলের উপাদান নিয়ে আসে। আর এসবের জন্য টাকা দেয় যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। আর যুবদলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা এসব ককটেল বানায়। এরপর তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় এগুলো সরবরাহ করে। এসবের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হবে।
এমএসি/পিএইচ