গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত নিয়মিত পয়সা দেয় : তথ্যমন্ত্রী
গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত নিয়মিত পয়সা দেয় বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে গুজব প্রতিরোধ সেল এবং ফ্যাক্টস চেকিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। এসময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিদেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে গুজব রটানো হয় সে বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশে বসে নানা ধরনের গুজব অনেকে ছড়ায়। যেমন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে। এগুলো বিদেশ থেকে ছড়ানো হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল।
তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এই গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত তাদের নিয়মিত পয়সা দেয়। এগুলো তাদের এজেন্ট। আবার পয়সা না দেওয়া ও কম দেওয়ার প্রেক্ষাপটে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে, সেটার অডিও ভাইরাল হয়েছে।
দেশের বিরুদ্ধে গুজব রটানোর জন্য যদি একটি রাজনৈতিক দল রটনাকারীদের পয়সা দেয়, এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না– মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন
গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অনেক জায়গায় তাদের নোটিফাই করা হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে কয়েক জায়গায় মামলাও হয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন অনুযায়ী মামলা করতে আমাদের দলের নেতাদের বলা হয়েছে।
গুজব রটনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এ বিষয়ে আপনার দল বা সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুজব রটনা করলে দুটি চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবিলা করি। দেশের মধ্যে থেকে যখন কেউ গুজব রটায় তখন তার বিরুদ্ধে মামলা হয় আইসিটি আইনে। তখন আবার বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ হয়, কেন মামলা হলো।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেখেন গুজব তো অনলাইনে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়। সেটা তো ডিজিটাল মাধ্যম, আর সেজন্য ডিজিটাল মাধ্যমে মামলা হবে। সেখানে মামলা হলে অনেকেই চেঁচামেচি করে যে কেন মামলা হলো এবং গ্রেপ্তার করলে তো আরও বেশি কথাবার্তা হয়। শেষে কি করেছে সেটি তখন ঢাকা পড়ে যায়। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আরেকটি হলো আমাদের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। যেকোনো মামলা ৫/৭ বছরের আগে হয় না। দ্রুত বিচার আইনে মামলা করলেও এক-দুই বছর লাগে। এটা যে শুধু আমাদের দেশে তা নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই এমন। কারো কারো শাস্তি হয়নি তা নয়। তবে বিচার প্রক্রিয়া যেহেতু দীর্ঘ তাই একটু সময় লাগে।
যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আপনাদের কোনো আলাপ-আলোচনা হয়েছে কি না– জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে সেটা একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। ভারত আইন করেছে সকল সার্ভিস প্রোভাইডার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিবন্ধিত হতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউকে আইন করেছে সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। আমাদের দেশে আইনটা এখনো হয়নি। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি।
তিনি বলেন, বার-বার তাগাদা দিচ্ছি এবং এখানে অফিস খোলার কথা বলছি। পাশাপাশি বাংলাদেশি আইনে নিবন্ধিত হওয়ার কথা বলছি। কিন্তু আমাদের এখানে নিবন্ধিত হতে হবে, সেই বাধ্যবাধকতা আরোপ আইনটি এখনো হয়নি। সেটি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমি আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, এখন তো আইন করার সময় নেই। আগামী সংসদে এ বিষয়ে আইন হবে বলে আমি আশা করছি।
এসএইচআর/এসএসএইচ