কার্যালয়ের ধারেকাছেও ভিড়তে পারেননি বিএনপির নেতাকর্মীরা
সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি চলছে। রোববার (৫ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। দ্বিতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচি চললেও এখনো বন্ধ রয়েছে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। সেখানে টানা অষ্টম দিনের মতো তালা ঝুলছে। অবরোধের সমর্থনে এ এলাকায় কোনো ধরনের কার্যক্রম তো দূরে থাক, কার্যালয়ের আশপাশেই দেখা যায়নি বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীদের।
রোববার সকালে সরেজমিনে নয়াপল্টন ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের মতো পুলিশের সরব উপস্থিতি রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরোপ করা হয়েছে কড়াকড়ি। কার্যালয়ের দুই পাশে সতর্ক অবস্থায় প্রস্তুতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পুলিশ সদস্যরা। সেখানে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না পথচারী কিংবা উৎসুক জনতাকেও। তালাবদ্ধ কার্যালয়ের ছোট গেটের সামনে নীল রঙের একটি চেয়ারে জমে আছে চিঠি। দুই পাশে প্রস্তুত রাখা হয়েছে হলুদ রঙের বেরিক্যাড। কার্যালয়ের পাশের হোটেল ভিক্টরি এবং পূবালী ব্যাংকের নিচে বসে আছেন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা। খোলেনি আশেপাশের দোকানপাটও। পাশাপাশি টহলে রয়েছে পল্টন থানা পুলিশের একাধিক টিম।
এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলীয় কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এবং মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তাদের শরিকরাও এই অবরোধ পালন করবে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে এই ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিন দিন (৩১ অক্টোবর-২ নভেম্বর) টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি-জামায়াত। তার আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে বিএনপি ও এর শরিকরা।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। সেদিন দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে কাকরাইল মোড়ের কাছে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করার পর একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয় এবং বেশকিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উপস্থিত সাংবাদিকদেরও ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও উপর্যুপরি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভন্ডুল করে দেয়। এর ফলে সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালানো হয়।
সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরদিন ২৯ অক্টোবর বিএনপি হরতাল পালন করে। একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এদিকে, হরতালের দিন এবং পরবর্তী কয়েকদিনে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরএইচটি/এসএসএইচ