নির্বাচন যদি সঠিকভাবে হয় তবেই আমরা অংশ নেব : জিএম কাদের
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গেই আছি। কী হবে তা এখনো কেউ জানে না, যদি নির্বাচন হয় তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঘোষণা না দিয়ে চলে যাব ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে আছি। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচন যদি সঠিকভাবে হয় তবেই আমরা নির্বাচনে অংশ নেব। যদি আমরা মনে করি সঠিকভাবে নির্বাচন হচ্ছে না তখন আমরা ঘোষণা দিয়েই নির্বাচন বর্জন করব।
শনিবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে নিজের লেখা “বাংলাদেশে গণতন্ত্র সোনার পাথরবাটি” দ্বিতীয় খণ্ড ও “MISERIES OF MISCONCEIVED DEMOCRACY Volume-2 বই দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, ঘোষণাটা আমাদের তরফ থেকেই আসতে হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। নির্বাচন নিয়ে কোনো একক সিদ্ধান্ত হবে না, প্রকাশ্যে ঘোষণা দেওয়া হবে। গণমাধ্যমের সামনে ঘোষণা দেওয়া হবে।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের লোক, আমরাই বানিয়েছি। তারা কোনো ভুল করলে অবশ্যই আমরা বলব। কথা বললেই শাস্তি পেতে হবে? সেজন্য আইন করা হবে? আমি ভুল বলতে পারি কিন্তু আমার বলার অধিকার তো আছে। আমরা যেন কথা বলতে না পারি সেজন্য আইন করা হচ্ছে। সরকার হচ্ছে কেয়ারটেকারের মতো, ভুল করলে পরিবর্তন করতে চাইব না? বাংলাদেশের মানুষের এই অধিকার এখন আর নেই।
আরও পড়ুন
গণতন্ত্র না থাকলে কোনো প্রকল্প গণমুখী হয় না তার প্রমাণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দাবি করে তিনি বলেন, বিবিসির দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, চার হাজার কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প, বছরে আয় করছে ১০০ কোটি টাকা। ১৫ বছর হচ্ছে এটার লাইফ। এটা কি বাস্তবসম্মত হলো? তাহলে আবার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পের জন্য চুক্তি কেন? আসলে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নামে দুর্নীতির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। যেখানে বেশি দুর্নীতি করা যায় সেই প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন হয়। আবার, রূপপুর আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়েও কথা আছে। ভারতে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলারে। অথচ, একই কোম্পানির ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থাপনে ইতোমধ্যেই খরচ হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। এটি একটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প।
তিনি বলেন, যেসব দেশে একনায়কতন্ত্র থাকে সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, স্থিতিশীল সরকার থাকলে অনেক উন্নয়ন হয়। এক সরকার বেশি দিন থাকলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ঢেকে রাখতে পারে না। সরকার বা সরকার প্রধান পরিবর্তন হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে যদি অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় তাকেই স্থিতিশীলতা বলা যায়। স্বৈরশাসনে কখনোই স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়। একটি সরকার বেশি দিন থাকাও অস্বাভাবিক ব্যাপার। একটি সরকার বেশি দিন থাকলে অস্থিতিশীলতার বীজ বড় হতেই থাকে। সরকার পরিবর্তন হলে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়, এসব কারণেই বিদেশি বিনিয়োগ আসে না। স্বাভাবিক নিয়মে সরকার পরিবর্তন হবে কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কোন প্রভাব পড়বে না, এটাই হচ্ছে স্থিতিশীলতা।
জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরীফা কাদেরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু , জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোকাম্মেল এইচ ভূঁইয়া প্রমুখ।
এএইচআর/এসকেডি