‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না বলেই এত উতলা হয়েছেন’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আমরা বুঝি আপনি আর ক্ষমতায় থাকতে পারছেন না, এজন্য এত উতলা হয়েছেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কিছুই করে নাই তাতেই আপনি তাকে পাঁচ বছর ধরে জেলে ঢুকিয়ে রেখেছেন। আমাদের ইলিয়াস নাই, চৌধুরী আলম নাই, প্রায় ৬শ থেকে ৭শ জন গুম হয়েছে, এর জবাব তো দিতে হবে।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) তোপখানা রোডের স্বাধীনতা হলে জিয়া প্রজন্ম দল আয়োজিত ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন ও এক দফা দাবি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা হচ্ছে কিন্তু ওনারা দুজন এখনো মুক্ত নন। বেগম খালেদা জিয়া ৫ বছর ধরে কারাবন্দি, তারেক রহমান ১৭ বছর ধরে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন।
তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশের গণতন্ত্র নয়, সারা বিশ্বের গণতন্ত্রের কথা বললে বেগম জিয়ার কথা চলে আসে। এরকম একজন মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া বিরল। যিনি এই বয়সে এসে সবকিছু বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার ওপর এত অত্যাচার এত মামলা নির্যাতন যে ভারতের মহাত্মা গান্ধীর ওপরেও এরকম হয়নি।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, এক অদ্ভুত দেশ বাংলাদেশ। যে দেশের জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বামী স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন। রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। তিনি (বেগম জিয়া) নয় মাস কারাবন্দি ছিলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। একটি ঠুনকো মিথ্যা মামলায় প্রথমে পাঁচ বছর পরে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ক্ষমতার লোভে মানুষ কত নিচে নামতে পারে, কত উপহাসের পাত্র হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেলফির বিষয়ে তিনি বলেন, একটা সেলফির জন্য পেছনে পেছনে ঘোরা। মানে ছেলেপেলেরা যা করে। যুবক-যুবতীরা যা করে। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী ছবি নেওয়া ও প্রকাশ করা কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। এটা নিয়ে তার সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, বিএনপি নাকি কষ্ট পাচ্ছে। এগুলো নিয়ে কেউ কেউ তার (ওবায়দুল কাদের) সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। এই দেশের জন্য লাখ লাখ দামাল ছেলেরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে। সেই দেশের একজন রাষ্ট্রপ্রধান একটি সেলফি তুলে বলছে সব ঠিক আছে। বিএনপি পশ্চাৎ অবলম্বন করেছে। এই ধরনের কথাবার্তা মানে সরকার কতটা রাজনৈতিক দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের সরকারপ্রধান আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পাশাপাশি বসবেন দুই দেশের পতাকা থাকবে তাহলে তো বোঝা যাবে। যেভাবে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বসেছে। কিন্তু মোদির সঙ্গে বসে কোনো লাভ হয়নি। তারপরেও বসেছে তো। ওই ধরনের একটা ছবি দিতেন। সেলফি তুলবেন কেন? এরকম ইয়ার্কি মারা রাষ্ট্রপ্রধানের ছবি এর আগে দেশবাসী দেখেনি। এটা দেশকে, দেশের মানুষকে ছোট করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকার পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে পারলে প্রতিদিন করে একটা করে প্রমোশন দেন। এর জবাব তো দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচনের নামে যা করলেন গুন্ডামির একটা সীমা থাকে। আইন আদালতকে দলীয়করণ করেছেন।
কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, আমাদের লড়াই এখন শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছে। এই লড়াইয়ে জিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। কোনোভাবে এই সরকারের ছাড় দেওয়ার পথ নাই। এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব। আর কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।
/এমএইচএন/এমএ