আঘাত করলে পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে : গয়েশ্বর
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরা যুগ যুগ ধরে শুধু মার খাব না। মার খাওয়ার জন্য তো দেশ স্বাধীন করিনি। কেউ আঘাত করলে পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে তাদের ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতে বিভিন্ন সংগীত পরিবেশনা করেন জাসাসের শিল্পীরা।
গয়েশ্বর বলেন, আমরা কোনো প্রাণহানি চাই না। শান্তিপূর্ণভাবে এই সরকারের পদত্যাগ চাই। শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত শেখ হাসিনার পতনের জন্য মাঠে থাকব। শেখ হাসিনার পতনের আগে গয়েশ্বর রায় চিতায় উঠবে না। তার পতন করেই চিতায় উঠব।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন আনন্দের হলেও আমি আনন্দিত নই। কারণ যাকে ঘিরে আমাদের সব, সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে অনুপস্থিত। আজকে খালেদা জিয়াকে বন্দি করে বলছেন- কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? সেটি বিষয় নয়। বিষয় হলো- তাকে মুক্তি দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি বিদায় বেলায় বললেন, বিচার বিভাগ যেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকে। তাহলে আপনি কী বলতে পারবেন যে, খালেদা জিয়া কেন জামিন পেলেন না? আপনি তো দায়িত্বে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, যে মামলার পরবর্তী তারিখ ১ থেকে দেড় মাস পর দেওয়ার কথা, সেখানে কদিন পর পর তারিখ নির্ধারণ করছে। আমার মনে হয় আমাদেরকে আর বেশিদিন কোর্টে যাওয়া লাগবে না। কোর্টে যাবেন শেখ হাসিনা। তবে তিনি এই লুটেরাদের নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সদ্য বিদায়ী প্রধান বিচারপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে... বিচার বিভাগের কী অবস্থান সেটি ফুটে উঠেছে। অর্থাৎ তার বক্তব্য একটা কঠিন বার্তা। সেটা বিশ্ববাসী ও বাংলাদেশের মানুষের জন্য।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা দুর্নীতিবাজ। যে কারণে ব্রিকসের সদস্য হতে পারেনি। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হচ্ছে। আজকে সরকার পরাজিত হয়েছে। তারা সব জায়গায় প্রত্যাখাত হচ্ছে। শুধু ব্রিকস নয়, বিশ্বের কোথাও তাদের জায়গা হবে না। আজকে প্রতিটি দিন বাংলাদেশের মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সুতরাং দেওয়ালের লিখন পড়ুন। জনগণের মনের ভাষা বুঝে বিদায় নিন। দেশটাকে মুক্ত করুন। বাকি ব্যবস্থা দেশের মানুষ নেবে। কারণ সংবিধান মোতাবেক দেশের মালিক তো জনগণ।
তিনি আরও বলেন, আমরাও সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন চাই। সেটি হতে হবে মানুষের ইচ্ছার ভিত্তিতে। কিন্তু সরকার যা করছে তা তো মানুষের ইচ্ছার সঙ্গে যায় না। আমরাও তো সবার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। ভাঁওতাবাজি করে লাভ হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী।
সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মো. আব্দুস সালাম, আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্ শায়রুল কবির খান ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারসহ আরও অনেকে।
এএইচআর/কেএ