১৫ আগস্টের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের দাবি
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের লক্ষ্যে একটা জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ওই ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে ‘১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টে শহীদদের স্মরণে’ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই জাতীয় কমিশনই হবে জিয়ার মরণোত্তর বিচারের সর্বপ্রথম ধাপ এবং প্রারম্ভিক পদক্ষেপ। তাই এই কমিশন গঠন করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রজন্মের সময়ের দাবি। যতদিন তদন্ত কমিশনের ফলাফল (প্রতিবেদন) বের না হবে, খুনিরা পর্দার অন্তরালে থেকে যাবে এবং এই বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতির ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন শেখ হাসিনা। কিন্তু অভিযুক্তদের কেউ কেউ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকায় বিচারের রায় আংশিক কার্যকর হয়। তাই আজকে যুব সমাজের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
বঙ্গবন্ধুর হত্যা কোনও সাধারণ হত্যাকাণ্ড ছিল না উল্লেখ করে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘এই মহান নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল একাধিক অশুভ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য। প্রথমত, অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, তারা বাংলাদেশকে স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা মেনে নিতে পারেনি। তারা পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক সংবিধান প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের জন্য একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান প্রণয়ন মেনে নিতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট এদেশের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সংস্কৃতি ধ্বংসের পেছনে এককভাবে দায়ী। কী বর্বর এবং অসহিষ্ণু ওদের রাজনৈতিক মনোবৃত্তি যে, বিরোধী মতামত তো দূরের কথা, পুরো দলটাকেই ওরা সাংগঠনিকভাবে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল।’
ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।
এমএসআই/এসকেডি