ইতিহাস ভুলে গেছেন? ফখরুলকে কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফখরুল সাহেব ইতিহাস ভুলে গেছেন? আজকে অবাক লাগে মির্জা ফখরুল যখন বলেন- আওয়ামী লীগ নাকি জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। দিনের আলোতে যাদের চক্ষুলজ্জা নেই তারা অন্ধকারে বলতে পারে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, এ মাসটি আমাদের জন্য রক্তক্ষরণের মাস। এ মাসে আমাদের বেদনা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। এই মাসে ভয়াল ট্র্যাজেডির স্মৃতি আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের আন্দোলন, আমাদের সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর আত্মহত্যা, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বিশ্বস্ত ঠিকানার নাম শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে কোথায় থেকে কোথায় নিয়ে এসেছে? ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ আজকের বাংলাদেশ। অন্ধকার থেকে আলোকিত করেছেন আজকের শেখ হাসিনা। এখানে মানুষ অভাব অনটনে থাকত, এখানকার মানুষ অন্ধকারে থাকত, সেই বাংলাদেশকে আজকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশে রূপান্তরিত করেছে।
মাথা থেকে তত্ত্বাবধায়কের ভূত নামিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। নইলে বিএনপির আম, ছালা দুটোই যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই এক কথা, এক বুলি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আমি বিএনপি নেতাদের বলি, পৃথিবীতে এখন একটা দেশ আছে, সেই দেশে তত্ত্বাবধায়ক আছে, আমি ফখরুল সাহেবকে বলি, দলবল নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক পাবেন। আর দুনিয়ার কোথাও তত্ত্বাবধায়কের হদিস নেই।
তিনি আরও বলেন, এই ভূত মাথা থেকে নামান, নির্বাচনে আসুন। নইলে আমও যাবে, ছালাও যাবে।
কাদের বলেন, শেখ হাসিনার শিকড় বাংলার মাটির অনেক গভীরে। আল্লাহ যাকে রাখবে বান্দা তাকে মারতে পারে না। শেখ হাসিনার উপর আল্লাহর রহমত আছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সময় তার বাবা (মেজর জিয়াউর রহমান) অহংকারে বলত, মানি ইজ নো প্রবলেম। যেমন পিতা, তেমন সন্তান। তার ছেলেও (তারেক রহমান) বলে, আন্দোলন করো, টাকার অভাব হবে না। কোথা থেকে আসে এই টাকা?
সেতুমন্ত্রী বলেন, ফখরুল এত বড় মিথ্যুক, আড়াই বছর আমি জেলে। জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায়। খালেদা জিয়ার সময় ১০ দিনও আমি ঘরে থাকতে পারিনি। তখন আমি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আজকে বিএনপি এখনো সন্ত্রাসের রাজনীতি করে। যে জেএমবি (জঙ্গী সংগঠন- জামাতুদিল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছে, তাদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য ৫০০ লোকের একটা মিছিল করতে পারেন নাই। এখন চোখের পানি ফেলছেন। আমির খসরু, মির্জা আজমের চোখমুখ শুকিয়ে গেছে।
কাদের বলেন, আজকে অবাক লাগে মির্জা ফখরুল যখন বলে আওয়ামী লীগ নাকি জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করছে৷ দিনের আলোতে সবার চোখের সামনে চক্ষুলজ্জা যাদের নেই, তারা এই কথা বলতে পারে। ফখরুল সাহেব ভুলে গেছেন ইতিহাস? তখন কি আপনার জন্ম হয় নাই?
তিনি বলেন, পুরো বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন। রক্তে ভেসে গেছে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি। সে রক্ত কাদের হাতে? সে রক্ত বিএনপির অনুসারীদের হাতে। এই মাসটি আমাদের জন্য রক্ত ঝরণের মাস। এই মাসে আমাদের বেদনার অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। এই মাসে ভালোবাসার কান্না ঝড়ে। আর এই মাসেই ভয়াল ট্র্যাজেডির স্মৃতি আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় অতীতের দিনগুলো। আমাদের আন্দোলন, আমাদের সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ, তাদের অবিসংবাদিত নেতৃত্ব। বঙ্গবন্ধুর পর তার সুকন্যা পিতা মুজিবের রক্তভেজা মাটিতে, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বিশ্বস্ত ঠিকানার নাম শেখ হাসিনা।
কাদের বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে কোথায় থেকে কোথায় নিয়ে গেছে৷ ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ, ১৫ বছর পরের আজকের বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা এই দেশকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে গেছেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, দক্ষিণের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, ডা. দিলীপ রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ হোসেন কামাল, মহিউদ্দিন মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।
এমএসআই/এমজে